দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। গতকাল মঙ্গলবার ই-মেইলে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছেন তিনি।
নিজের ভবিষ্যত অন্ধকার, তা টের পেয়ে গেছেন ডমিঙ্গো। বুঝে গেছেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড আর তাকে চায় না। তাই নিজ থেকে সরে দাঁড়ানোকেই শ্রেয় মনে করেছেন এ দক্ষিণ আফ্রিকান হেড কোচ।
ডমিঙ্গো কোচ থাকাকালীন সাফল্যের সঙ্গে ব্যর্থতাও আছে। কিন্তু ডমিঙ্গোর সমস্যা হচ্ছে, ক্রিকেটারদের সঙ্গে বোঝাপড়া ঠিক ছিল না তার। অনেকে অভিযোগও করেছিলেন, ডমিঙ্গো আসলে খোলাখুলি আলোচনা করতেন না।
তাইতো ছুটি কাটিয়ে ডমিঙ্গো ভারত সিরিজে দলের সঙ্গে যোগ দিলেও বিসিবি ভেতরে ভেতরে কোচ খুঁজছিল। গোপনে একাধিক কোচের সঙ্গে যোগাযোগও করা হয়। এখন পর্যন্ত তিন কোচের সঙ্গে কথা বলেছে বিসিবি।
একজন হলেন বাংলাদেশের সাবেক কোচ লঙ্কান চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। অপর দুজন হলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ল্যান্স ক্লুজনার ও অস্ট্রেলিয়ার মাইক হাসি।
জানা গেছে, বিসিবি চায় এমন কাউকে দায়িত্ব দিতে, যার ধ্যানজ্ঞান হবে বাংলাদেশ জাতীয় দল। যিনি নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন। ব্যক্তিত্বসম্পন্ন এবং দল পরিচালনা ও ক্রিকেটারদের কোচিং করানোর পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণ করার কাজটিও দক্ষতার সাথে পালন করতে পারবেন।
সেই বিবেচনায় অস্ট্রেলিয়ান মাইক হাসি আর দক্ষিণ আফ্রিকান ল্যান্স ক্লুজনারের চেয়ে এগিয়ে হাথুরুসিংহে। হাথুরুসিংহে কর্তৃত্বপরায়ন, দায়িত্ব সচেতন। জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করার সক্ষমতাও তার প্রমাণিত। এর মধ্যে বাংলাদেশকে চেনেনও ভালো। তার অধীনেই যে একের পর এক সাফল্য পেয়েছে টাইগাররা।
তাই হাথুরুসিংহেই ফের হেড কোচ হিসেবে পেতে আগ্রহী বিসিবি। তার সামর্থ্য, ক্রিকেট মেধা, ক্রিকেট বোধ, কোচিং স্টাইল সবই বিসিবির জানা।
বাংলাদেশের সিনিয়র ক্রিকেটার সাকিব, তামিম, মুশফিক ও রিয়াদসহ লিটন, মিরাজ, মোস্তাফিজ, তাসকিন, সৌম্য, তাইজুলদের ভালোভাবেই চেনেন হাথুরুসিংহে। তাই তার দিকেই ঝুঁকেছে বিসিবি।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, হাথুরুসিংহের সাথে কথাবার্তা নাকি অনেকদূরই এগিয়েছে। হাথুরুও নিজের চাহিদার কথা বিসিবিকে জানিয়েছেন। আগের চেয়ে বেতন ভাতা ও আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা অনেক বেশি চেয়েছেন হাথুরু। তারপরও বিসিবি তার প্রতি আগ্রহী। এখন দেখার বিষয় শেষ পর্যন্ত কাকে বাংলাদেশের কোচ হিসেবে বেছে নেয় বিসিবি।
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন অবশ্য দীর্ঘমেয়াদি কোচিং প্যানেলের কথাই বলেছেন। সেই হিসেবে এখন আর পেছনে তাকানোরও সুযোগ নেই। যাকেই প্রধান কোচের দায়িত্ব দেওয়া হবে তিনি যে কয়েক বছর টাইগারদের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন সেটি আপাতত পাপনের কথাতেই স্পষ্ট।