জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার বগারচর ইউনিয়নে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের রাস্তা অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধানে গিয়ে প্রাণনাশের হুমকির শিকার হয়েছেন একাধিক গণমাধ্যমকর্মী। অভিযোগ তীর বগারচর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সোহেল রানা পলাশ।
এ ঘটনায় শনিবার (২১ জুন) রাতে ভুক্তভোগী সাংবাদিকদের পক্ষে দৈনিক নয়া দিগন্তের উপজেলার প্রতিনিধি আল মুজাহিদ বাবু বাদী হয়ে বকশিগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এর আগে বিকেল ৪টা দিকে ইউনিয়নের ঘাষিরপাড়া মন্ডলবাড়ি সাত্তার খলিফার বাড়ি থেকে সামাদ হাজির বাড়ি পর্যন্ত সিসি ঢালাইয়ের কাজ সরেজমিনে দেখতে যান সাংবাদিকরা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সেখানে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে।
তথ্য সংগ্রহের সময় সাংবাদিকদের ক্যামেরা বন্ধ করতে বলেন চেয়ারম্যান সোহেল রানা পলাশ। সাংবাদিকরা তা না মানায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং সরাসরি মেরে ফেলার হুমকি দেন। আরও বলেন, “আমার কাজের ক্ষতি হলে সাংবাদিকদের দেখে নেব।”
হুমকির শিকার গণমাধ্যমকর্মীরা হলেন—দৈনিক ইনকিলাবের প্রতিনিধি এমদাদুল হক লালন, দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রতিনিধি আল মোজাহিদ বাবু, দৈনিক ভোরের বাণীর আমিনুল ইসলামসহ আরও দুই সাংবাদিক।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক এমদাদুল হক লালন বলেন, “নিম্নমানের কাজের অভিযোগের ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহে গেলে চেয়ারম্যান আমাদের ওপর চড়াও হন এবং অশালীন ভাষায় গালাগাল ও জীবন-নাশের হুমকি দেন।”
একইভাবে সাংবাদিক বাঁধন মোল্লা জানান, “আমরা তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে চেয়ারম্যান উত্তেজিত হয়ে ক্যামেরা বন্ধ করতে বলেন। তিনি বলেন, ক্যামেরা বন্ধ না করলে আমরা জীবিত ফিরতে পারব না।”
ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বকশীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আব্দুল লতিফ লায়ন। তিনি বলেন, “সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন আচরণ গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য হুমকিস্বরূপ। আমরা চেয়ারম্যানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।”
বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সোহেল রানা পলাশ বলেন, “আমি এ বিষয়ে কিছু বলি নাই।”
বকশীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার শাকের আহাম্মেদ বলেন, “এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”