সার্বিয়ার বিপক্ষে ব্রাজিলের কাতার বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে জোড়া গোল করে আলোচনায় আছেন স্ট্রাইকার রিচার্লিসন। গোটা ম্যাচে এই ফুটবলার তেমন পায়ে বল পাচ্ছিলেন না, প্রথমার্ধে একবার ধারাভাষ্যকাররা বলছিলেন রিচার্লিসনকে টেলিভিশন পর্দায় দেখাই যাচ্ছে না।
সেই রিচার্লিসনের করা গোল বারবার দেখালো টিভিতে, পত্রিকায় তার বাইসাইকেল কিকের বড় করে ছবি ছাপানো হলো পরের দিন, সোশাল মিডিয়ায় তার জীবনের গল্প বলে বেড়াচ্ছেন অনেকে।
রিচার্লিসন এখন ব্রাজিলের সেই তারকা যিনি বিশ বছর আগের স্মৃতি ফিরিয়ে আনছেন, সেবার ব্রাজিল তো বটেই বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় নাম্বার নাইন- রোনালদো জোড়া গোল করেছিলেন- সেটা অবশ্য বিশ্বকাপের ফাইনালে- জার্মানির বিপক্ষে। রিচার্লিসনের কাছে সমর্থকরা এখন এমন আশাই করেন।
ব্রাজিল দলের জন্য প্রথম রাউন্ড, কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল এসব আসলে উপলক্ষ্য মাত্র, বিশ্বকাপের ফাইনালে জয় ছাড়া ব্রাজিলের কোনও প্রাপ্তিই তৃপ্ত করবে না, পাঁচবারের বিশ্বকাপ জয়ী দলের সমর্থকদের।
ব্রাজিলের অধিনায়ক নেইমার থাকছেন না গ্রুপ পর্বের বাকি দুই ম্যাচে। এই খবর পুরনো। কিন্তু প্রশ্ন হবে কে খেলবেন নেইমারের জায়গায়? নেইমারের ইনজুরি ব্রাজিলের জন্য সবসময়ই খারাপ খবর, গত এক দেড় দশকে ব্রাজিলে নেইমারের চেয়ে বড় তারকা কেউ আসেননি।
ব্রাজিলের মাটিতে ২০১৪ সালে নেইমার পিঠে চোট পেয়েছিলেন কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে, সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে যাওয়ার পর গোটা ব্রাজিল দল বিমর্ষ হয়ে পড়েন। সেই সেমিফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে ব্রাজিলের অবস্থা ছিল অবিস্মরণীয়- ৭-১ গোলে হেরেছিল ব্রাজিল, তাও ব্রাজিলেরই মাঠে বেলো হরিজন্তে স্টেডিয়ামে।
এবারের ব্রাজিলের স্কোয়াড আট বছর আগের স্কোয়াড থেকে শক্তিশালী। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব নিউক্যাসল ইউনাইটেডে খেলা ব্রুনো গুইম্যারেজ দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন, তিনিই সম্ভবত সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে নেইমারের জায়গায় খেলবেন।গুইম্যারেজ পুরোদস্তুর মিডফিল্ডার। নেইমারও সার্বিয়ার বিপক্ষে তার ফরোয়ার্ড রোল ছেড়ে খানিকটা নিচে নেমে এসে খেলেছেন।
গুইম্যারেজের জন্য নেইমারের জায়গা নেয়াটা তুলনামূলক সহজ হবে। তার জন্য এটা একটা চ্যালেঞ্জও, হঠাৎ করে পাওয়া সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে ব্রাজিলের কোচ তিতে তার ওপর সামনেও ভরসা রাখতে পারেন। তিতের আরেক পছন্দের মিডফিল্ডার হলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে খেলা ফ্রেড। খানিকটা রক্ষণাত্মক তবে তার আরেকটা প্লাস পয়েন্ট হলো তিনি ক্লাবে ক্যাসেমিরোর সাথে জুটি বেঁধে খেলেন।
সার্বিয়ার বিপক্ষে বদলি হিসেবে নেমে ফ্রেড খানিকটা ঝলক দেখিয়েছেন। দূরপাল্লার একটি শট পোস্টে লেগে ফেরত এসেছিল। ফ্রেড খুব সৃজনশীল ফুটবলার নন, কিন্তু তার কর্মক্ষমতা অনেক। মাঠের দুই দিকেই ফ্রেডের অংশগ্রহণ থাকে চোখে পড়ার মতো। রদ্রিগোকেও খেলাতে পারেন তিতে, রদ্রিগো রেয়াল মাদ্রিদের হয় নিজেকে প্রমাণ করেছেন।
বড় ম্যাচে তিনি পারফর্ম করেছেন। তুরিনে তিনটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছিল ব্রাজিল। বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, ওই তিনটি প্রস্তুতি ম্যাচে নেইমারের জায়গায় রদ্রিগো খেলেছেন।
ব্রাজিলের উইঙ্গার অ্যান্টনি ও মিডফিল্ডার লুকাস পাকোয়েতাও অনিশ্চিত সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে এই ম্যাচে।
ব্রাজিলের একাদশ
(৪-৩-৩): এলিসন বেকার (গোলরক্ষক), সান্দ্রো, সিলভা, মার্কুইনহোস, মিলিতাও, গুইমারেস, ক্যাসেমিরো, ফ্রেদ, ভিনিসিউস, রাফিনহা, রিচার্লিসন।