জামালপুরে কারাবিদ্রোহের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হাজতি আবু সুফিয়ান (২০) মারা গেছে। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার সিএমএইচ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জামালপুরে কারাবিদ্রোহে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ৮ জনে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জামালপুর জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি২) এর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহেল রানা। নিহত আবু সুফিয়ানের বাড়ি জামালপুরের বকশিগঞ্জ উপজেলার আইরমাড়ী বটতলা এলাকায়। সে ওই এলাকার আব্দুল মালেক খোকার ছেলে।
জানা যায়, সরকার পতনের পর গত ৮ আগস্ট দুপুরে কারাগারের ভেতরে বন্দিদের দুপক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে ৬ জন ও পরে আর একজনের মৃত্যু হয় এবং জেলার ও ৩ কারারক্ষীসহ আরও ১৯ জন আহত হয়। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে হাজতি আবু সুফিয়ান ঢাকার সিএমএইচ হাসপাতালে মারা গেছে।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়, নিহত হাজতি আবু সুফিয়ান বকশিগঞ্জের ঝালরচর এর আবু রায়হান নামের এক স্কুল শিক্ষকের বাড়িতে ডাকাতি মামলায় গত ১৫ এপ্রিল জেলা গোয়েন্দা শাখা-২ অভিযান পরিচালনা করে গ্রেপ্তার করে। পরের দিন আসামীকে আদালতে প্রেরন করা হয়। পরে আসামি আবু সুফিয়ান দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিলে আদালত আসামিকে জামালপুর জেলা কারাগারে প্রেরণ করেন।
এরপর গত ৮ আগস্ট জামালপুর জেলা কারাগারে থাকা অবস্থায় কারাগারে সংগঠিত বন্দি বিদ্রোহের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকার সিএমএইচ এ চিকিৎসাধীন ছিল। সোমবার দিবাগত রাতে সে মারা যায়।
এ বিষয়ে জামালপুর জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি২) এর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহেল রানা জানান, নিহত আবু সুফিয়ান ডাকাতি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জেলা কারাগারে ছিল। গত ৮ আগস্ট কারা বিদ্রোহের ঘটনায় সে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন ছিল।
সে সোমবার দিবাগত রাতে মারা গেছে।
তিনি আরও জানান, আসামি আবু সুফিয়ান বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে মর্মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। যা সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে দস্যুতার অপরাধে সে জামালপুর জেলা কারাগারে ছিল এবং সেখান থেকে পালানোর চেষ্টাকালে গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় মারা গিয়েছে।
জামালপুর জেলা কারাগারের সাবেক জেলার আবু ফাতাহ বলেন, আবু সুফিয়ান কারা বিদ্রোহের একজন লিডার ছিল। ওই সময় সুফিয়ানসহ সাতজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছিলাম। সুফিয়ান গুরুতর আহত ছিল। তাকে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে কি হয়েছে আর জানি না।
উল্লেখ্য, কারা বিদ্রোহের সময় বিক্ষুব্ধ বন্দিরা কারাগারের ভেতরের দুটি ভবন, জেলারের কক্ষ ও প্রধান গেটের ভেতরে একটি গেট ভাঙচুরের পর অগ্নিসংযোগ করে। সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস প্রায় ১৫ ঘণ্টা চেষ্টার পর কারাগার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। জেলারের কার্যালয়, হাসপাতাল ও আটটি ওয়ার্ডে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে এতে কারাগারের জেলার, কারারক্ষী, বন্দীসহ ১৯ জন আহত হয়। জামালপুর জেলা কারাগারে ৬৬৯ বন্দির মধ্যে সাজাপ্রাপ্ত বন্দি ছিল ১০০জন।