সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি বলেছেন এটি এখন বিপদের কারবার। এ নিয়ে বললেই, কথা বলার স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়াও এখন ফেসবুকে চলে আসে।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) সকালে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের আপিল বেঞ্চে বিএনপির ৬ আইনজীবীর আদালত অবমাননার শুনানিতে এমন কথা বলেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
এসময় বিএনপির আইনজীবীরা মিডিয়ায় তাদের বক্তব্য বিকৃতির অভিযোগ আনলে প্রধান বিচারপতি সাফ জানিয়ে দেন মিডিয়ার কোনো দোষ নেই। মিডিয়া কি দেবে না দেবে সেটা তাদের বিষয়। মিডিয়ার দোষ দেবেন না।
বিএনপির ৬ আইনজীবীর বিভিন্ন কর্মকান্ডের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে আপিল বিভাগ বলেন, একদিকে ক্ষমা চান আরেকদিকে গিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন। এটা ক্ষমার যোগ্য না।
পরে ২ সপ্তাহ পর আগামী ২২ আগস্ট বিএনপির ৬ আইনজীবীকে ফের আপিল বিভাগে হাজির হতে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।
গত ২৫ জুলাই বিএনপিপন্থি ছয় আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদনের ওপর আদেশের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ ও নিয়মিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এর আগে গত ১২ জুন আপিল বিভাগের দুই বিচারপতির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন ও মিছিল সমাবেশ করার ঘটনায় আদালত অবমাননার মামলায় বিএনপির ছয় শীর্ষ আইনজীবী নেতাকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে আদালত অবমাননার অভিযোগের বিষয়ে ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে তাদের লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ছয় আইনজীবী তাদের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা দাখিল করেন।
আদালত অবমাননায় অভিযুক্ত ছিলেন সাত জন। তাদের মধ্যে সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী গত ২ মে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তাই তার বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ বাদ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান আইনজীবী মাকসুদ উল্লাহ।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী ছাড়া আদালত অবমাননার অভিযোগ ওঠা বিএনপিপন্থি ছয় আইনজীবী হলেন- জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ও বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরিন মুন্নি, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সহ-সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গাজী মো. কামরুল ইসলাম সজল।
আপিল বিভাগের দুজন বিচারপতি সম্পর্কে এক সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যের সূত্র ধরে এই আইনজীবীদের বিরুদ্ধে গত বছরের ২৯ আগস্ট আদালত অবমাননার অভিযোগে আবেদন করা হয়। আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. নাজমুল হুদা।