সম্প্রতি লক্ষ্য করছি কিছু মানুষ পায়ে হেঁটে হজ্বে গমন করছেন। বাদ যাচ্ছেন না নারীও! মানুষ আবার তাদের বাহবা দিচ্ছেন, কেউ কেউ কিছুদূর পায়ে হেঁটে সঙ্গ দিচ্ছেন। কেউ আবার অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করছেন। কিন্তু আসলেই কি এই পায়ে হেঁটে হজ্ব করার মধ্যে কোনো অতিরিক্ত সওয়াব বা ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে কোনো ইতিবাচক দিক আছে? আমার মনে হয় না!
প্রথমত ইসলাম খুব সহজ! মানুষের জন্য কষ্টসাধ্য কোনো ইবাদত আল্লাহ রাখেননি। বরং ইবাদতের মধ্যে আল্লাহ পরম সুখ ও শান্তির অনুভূতি দিয়ে রেখেছেন৷ যেমন মসজিদে গেলে পিপাসা দূর হয়ে যায়, দীল ঠান্ডা হয়! সিজদাহে গেলে সকল ক্লান্তি দূর হয়ে যায়, সিজদাহ থেকে উঠতেই মনে চায়না! সেখানে বছর ধরে হাজার মাইল হেঁটে হজ্ব! নিশ্চয়ই আল্লাহ এমনটি বান্দার জন্য চায়নাই!
চলুন একটু দেখে আসি, ইসলাম আসলে কি বলছে! বুখারী একটি হাদীসে উল্লেখ্য আছে, “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জনৈক বৃদ্ধ ব্যক্তিকে তার দুই ছেলের ওপর ভর করে হেঁটে যেতে দেখে বললেন, তার কী হয়েছে? তারা বললেন, তিনি পায়ে হেঁটে হজ করার মানত করেছেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, লোকটি নিজেকে কষ্ট দিক আল্লাহ তায়ালার এর কোনো দরকার নেই।
অতঃপর তিনি তাকে সওয়ার হয়ে চলার জন্য আদেশ করলেন।’ (বুখারি শরিফ)” এই হাদীস কি যথেষ্ট নয় অতসব আবেগীদের জন্য যারা যানবাহনে চড়ে হজ্ব করার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও পায়ে হেঁটে লোক দেখানো ইবাদতের উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছে! একাধিক হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হজ্বসহ যে কোনো ইবাদতের ক্ষেত্রে অতি কঠিন পন্থা পরিহারের নির্দেশ দিয়েছেন।
সুতরাং যে বা যাহারা হজ্বের মতো ফরজ ইবাদতকে পুঁজি করে নিজেদের ভাইরাল করা, কিংবা অর্থনৈতিক ব্যবসা করার ফন্দি আঁটছে তাদেরকে নিরুৎসাহিত করুন! সচেতন মুসলমান হিসেবে এটিও আপনার দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে।
শিবলী মাহাদী,কলামিস্ট