কুষ্টিয়ার সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতার পথিকৃত বর্ষিয়ান সাংবাদিক, মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রথম পত্রিকা ‘স্বাধীন বাংলা’ ও কুষ্টিয়া থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক “ইস্পাত” পত্রিকার সম্পাদক প্রবীণ সাংবাদিক আলহাজ্ব ওয়ালিউল বারী চৌধুরী’র ২য় মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
তিনি ২০২০ সালের ২৫ জুলাই শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় মজমপুর গেটস্থ ১নং চৌধুরী কওছেরউদ্দিন আহমেদ সড়কে তাঁর নিজ বাসভবনে বার্ধক্যজনিত কারনে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।
উল্লেখ্য, আশি ও নব্বই দশকে তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত ইস্পাত পত্রিকা কুষ্টিয়ার সবচেয়ে প্রভাবশালী সাপ্তাহিক হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। দীর্ঘ জীবনের সাংবাদিকতার কারণে এই অঞ্চলের মানুষের কাছে তার পরিচিতি ব্যাপক। মরহুম ওয়ালিউল বারী চৌধুরীর সম্পাদনায় ১৯৭১ সালের ১৫ এপ্রিল নদীয়া জেলার রানাঘাট থেকে ‘স্বাধীন বাংলা’ নামে মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রথম পাক্ষিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়।
এর আগে ১৯৬৪ সালের দিকে তিনি ‘সাপ্তাহিক মশাল’ নামেআরেকটি মাসিক পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক ছিলেন। স্বাধীনতা উত্তর ‘পাক্ষিক সমীক্ষা’ পত্রিকার প্রকাশক ছিলেন । ‘ইস্পাত’ বাদে ১৯৭৫ সালে দেশের সকল পত্রিকার সাথে এগুলো বন্ধ হয়ে যায় । তবে সে সময় ‘মাসিক ইস্পাত’ পত্রিকা চালু থাকে ।
যা খুলনা বিভাগের মধ্যে একমাত্র পত্রিকা ছিল। ১৯৭৫ সালের ১৭ নভেম্বর ‘ইস্পাত’ পত্রিকা মাসিক থেকে সাপ্তাহিকে উন্নীত হয়ে প্রকাশিত হতে থাকে। “একজন নির্ভিক সাংবাদিকের কোন বন্ধু নেই” এটাই ছিল তাঁর সাংবাদিকতার আদর্শ। কখনো অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেননি।
অত্যাচার অনিয়ম অধিকার আদায়ের একজন বলিষ্ঠ নক্ষত্র অস্ত গেল। যিনি সাংবাদিকতার যাত্রা শুরু করেছিলেন ‘বিবশষু ঊধংঃ চধশরংঃধহ’ পত্রিকায় সহ-সম্পাদক হিসেবে।
কুষ্টিয়ার প্রায় সবকটি সামাজিক প্রতিষ্ঠানের আজীবন সদস্য তিনি। রেডক্রিসেন্ট, শিশু হাসপাতাল, লালন একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি, এপেক্স ইন্টারন্যাশনাল ক্লাব, কমিশনার বাংলাদেশ স্কাউট, ছাত্র কল্যাণ ফাউন্ডেশন, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্যসহ আরো অনেক সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন।
তিনি দেশে বিদেশে নানান সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। বিভিন্ন সামাজিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংগঠনের আমন্ত্রণে তিনি পৃথিবীর ২৭টি দেশ সফর করেছেন। ২০০১ সালে পবিত্র হজ্বব্রত পালন করেন।
কুষ্টিয়ার বহু সাংবাদিকের শিক্ষাগুরু এই মানুষটি তার অসংখ্য গুনগ্রাহীদের রেখে গেছেন। যারা আজ স্ব স্ব কর্মক্ষেত্রে ক্ষেত্রে প্রসিদ্ধ।