1. admin@dailymirrorofbangladesh.com : mirror :
  2. mamun.cou16@gmail.com : Mamun : Mamun
  3. m.sohag21st@gmail.com : Sohag Shah : Sohag Shah
  4. shiblyhasan1212@gmail.com : shibly hasan : shibly hasan
  5. mohiuddinahmadtanveer@gmail.com : Mohiuddin Ahmad Tanveer : Mohiuddin Ahmad Tanveer
বিচারালয়ে যেন রাজনীতিকরণ না হয় : প্রধান বিচারপতি » দ্যা মিরর অব বাংলাদেশ
৯ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ| ২৬শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ| গ্রীষ্মকাল| সোমবার| বিকাল ৫:৪৭|

বিচারালয়ে যেন রাজনীতিকরণ না হয় : প্রধান বিচারপতি

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৩
  • ১৯ বার সংবাদটি পড়া হয়েছে
obuydul hasan 20231008123033

প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, আমি চাইব বিচার বিভাগ ও বিচারালয়ে যেন কোনোভাবেই রাজনীতিকরণ না হয়। বিচারক ও আইনজীবীদের সম্মিলিত দায়িত্ব পালনের মাধ্যমেই কেবল সুবিচারের লক্ষ্য অর্জিত হতে পারে। তবেই বিচার বিভাগের মর্যাদা অক্ষুণ্ণ থাকবে।

রোববার (৮ অক্টোবর) আপিল বিভাগের এজলাস কক্ষে তাকে দেওয়া সংর্বধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ও অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের পক্ষ থেকে এ সংর্বধনা দেওয়া হয়।

প্রধান বিচারপতি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের এই বিচার অঙ্গন পারস্পরিক সহনশীলতা, সহমর্মিতা ও ভালোবাসায় আলোকিত হোক এটিই আমার প্রত্যাশা। একটি কথা একটু অপ্রিয় হলেও বলতে চাই, কোনো বিষয়ে ভালভাবে না জেনে বা যথেচ্ছভাবে বিচারক ও আদালত সম্পর্কে কটু মন্তব্য মোটেই সভ্যতার ইঙ্গিত বহন করে না। সাবেক প্রধান বিচারপতি জনাব হাবিবুর রহমানের ভাষায় আমিও উচ্চারণ করতে চাই, কোনো বিচারকই সমালোচনার ঊর্ধ্বে নন। সভ্য জগতে সভ্য সমালোচনার একটা অবকাশ রয়েছে। বিচারকের রায়ের সমালোচনা করার অধিকার বাক স্বাধীনতার একটা অংশ বলে আমি মনে করি। আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বিধিনিষেধ সাপেক্ষে সংবিধানে এই বাক স্বাধীনতার নিশ্চয়তা বিধান করা হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশে যে মুক্ত সাংবাদিকতা বিরাজ করছে তার ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য যথেচ্ছ সমালোচনার পরিবর্তে জেনেশুনে, ওয়েল ইনফর্মড (তথ্য সমৃদ্ধ) হয়ে সমালোচনা করা প্রয়োজন। তবে কেউ যদি স্বাধীনতার অপব্যবহার করে তা সংবাদ মাধ্যমই হোক, আইনজীবীই হোক বা যে কেউ হোক তাকে শায়েস্তা করার জন্য আদালতের হাত যথেষ্টই লম্বা।

নবীন আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, একাগ্রতা, নিষ্ঠা, পরিশ্রম পেশার সবচেয়ে বড় মূলধন। নবীন আইনজীবীদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ। অর্থ উপার্জনের প্রতি মোহ অনেক সময় তরুণ আইনজীবীদের বিভ্রান্ত ও অনৈতিক আচরণে উদ্বুদ্ধ করতে পারে। নতুন আইনজীবীদেরকে অর্থকড়ির এই সহজ মোহ থেকে নিজেদেরকে মুক্ত রাখতে হবে। তাদের আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে যে, সততার সঙ্গে লিগ্যাল প্র্যাকটিসে লেগে থাকলে আর্থিক সচ্ছলতা নিশ্চিতভাবে আসবে। এই পেশায় শর্টকাট কোনো রাস্তা নেই।

অধস্তন আদালত ও বিচারকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা আপনাদের সাধ্যের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে অসহায় মানুষের সর্বোচ্চ কল্যাণ যেন নিশ্চিত হয় সেদিকে দৃষ্টি রেখে দায়িত্ব পালন করবেন। দায়িত্ব পালনের প্রকৃতি ও বিশালতায় আমাদের মধ্যে পার্থক্য থাকলেও বিচারক হিসেবে আমাদের কারও মধ্যে কোনো ভেদাভেদ নেই। আমরা সকলেই বিচারক।

তিনি বলেন, অধস্তন আদালতসমূহকে আমি বিচার বিভাগের ‘প্রেস্টিজ পয়েন্ট’ বলে মনে করি। সম্মিলিতভাবে বিচারক হিসেবে আমাদের সকলের সুনাম সবচেয়ে বেশি নির্ভর করে অধস্তন আদালতের ওপর। কেননা, প্রাত্যহিক কাজে সবচেয়ে প্রান্তিক জায়গা থেকে একজন বিচারপ্রার্থী শুরুতেই যে আদালতের দারস্থ হন সেটি হলো জেলা পর্যায়ের কোন আদালত। তাই জেলা পর্যায়ের আদালতসমূহে আমার যে সহকর্মী বিচারকবৃন্দ কর্মরত আছেন তাদেরকে বলব, তারা যেন কখনোই সময়ের অপচয় না করে বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি লাঘবে কাজ করেন।

তিনি আরও বলেন, বারের বিজ্ঞ সদস্যবৃন্দ, আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ ও বিচারপ্রার্থী জনগণের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সুন্দর সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। স্মরণ রাখতে হবে যে, বিচারকের চরিত্রের সঙ্গে অহেতুক তাড়াহুড়া, হঠাৎ ধৈর্য হারানো, আইনজীবীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, আদেশ ও রায় লেখার ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় সময়ক্ষেপণ ইত্যাদি আচরণ কখনোই যায় না। তাই সচেতনভাবে এসব পরিহার করে চলতে হবে। অধস্তন আদালতের বিচারকবৃন্দের অসুবিধাসমূহও আমাদের বিবেচনায় রাখতে হবে। একই সঙ্গে বারের বিজ্ঞ সদস্যবৃন্দ ও অন্যান্যদের প্রতি আহ্বান জানাবো তারা যেন বিজ্ঞ বিচারকদের দায়িত্বপালনের প্রতি সবসময় সহায়তামূলক সাহায্যের মনোভাব অক্ষুন্ন রাখেন।

বিচারপতি বলেন, মানব সমাজ ও বিচারপ্রার্থীর কল্যাণে এবং দ্রুত ও দুর্নীতিমুক্ত সুবিচার নিশ্চিতকরণে নিবেদিত হওয়ার মাধ্যমে মানুষের প্রতি, সমাজের প্রতি একজন বিচারক বা আইনজীবীর ভালবাসা মূর্ত হতে পারে। আর এর মাঝেই আমরা পেতে পারি আমাদের কর্মজীবনের সার্থকতা। সংবিধানের প্রতি লক্ষ্য রেখে বিচার প্রশাসনকে রাখতে হবে স্বচ্ছ, দুর্নীতিমুক্ত, স্বাধীন এবং সোশ্যাল জাস্টিস তত্ত্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। একটি দুর্নীতিমুক্ত বিচার ব্যবস্থা দেশ ও জাতির জন্য গর্বের। আমার দায়িত্ব পালনকালে আমার সতীর্থ বিজ্ঞ বিচারকবৃন্দ এবং আপনারা বিজ্ঞ আইনজীবীবৃন্দের সুচিন্তিত পথ ধরে একটি দুর্নীতিমুক্ত বিচার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাব।

সাক্ষী সুরক্ষা আইন নিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, সাক্ষী ও ভিকটিমদের সুরক্ষার জন্য দেশে এখন পর্যন্ত কোনো আইন প্রণীত হয়নি। স্থানীয় প্রভাব ও ভীতিতে আক্রান্ত সাক্ষীরা সমন জারির পরও আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসেনা। এলেও ভয়ে সাক্ষীরা আদালতে সত্য গোপন করেন। ফলে মামলার বিচার প্রলম্বিত হয়। অনেক সময় সাক্ষীর হাজিরা নিশ্চিতকরণে সংশ্লিষ্ট বিচারকের কলম কার্যকরভাবে সচল হয় না। বছরের পর বছর প্রলম্বিত হয় বিচার। সাক্ষীরা হয়ে পড়েন অনাগ্রহী। এসব অবস্থার পরিবর্তন প্রয়োজন। এজন্য সবার সক্রিয় ভূমিকা অনিবার্য।

আইনের শাসন প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, যে সমাজে আইনের শাসন যতটা দৃঢ় সেই সমাজ ও রাষ্ট্র তত বেশি সভ্য ও মানবিক। সমাজ ও রাষ্ট্রের গুণগত মান উন্নয়নে বিচার বিভাগের রয়েছে অপরিহার্য ভূমিকা। বিচারকের কর্তব্য ও আচরণ সম্পর্কে যে সার্বজনীনভাবে স্বীকৃত ধারণা আমরা দেখি তা সব সভ্য সমাজে ও রাষ্ট্রে অভিন্ন ও ধ্রুব হিসেবেই বিরাজমান রয়েছে।

ন্যায় বিচারের অঙ্গীকার করে প্রধান বিচারপতি বলেন, পবিত্র কোরআন শরিফে সূরা নিসার ৪৫৮ আয়াতে আল্লাহ নির্দেশ দিচ্ছেন যে, তোমরা আমানত তার মালিককে ফিরিয়ে দিবে আর যখন তোমরা মানুষের মধ্যে বিচার করবে তখন ন্যায় পরায়নতার সঙ্গে বিচার করবে। আমি যেন আল্লাহ তাআলার এই নির্দেশ থেকে কখনো বিস্মৃত না হই।

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ..
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি । সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত © THE MIRROR OF BANGLADESH 2024