বন্য প্রাণী হত্যা করে খাওয়ার দৃশ্য থাকায় ‘হাওয়া’ সিনেমা প্রদর্শন বন্ধে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার সোমবার এ নোটিশ পাঠান।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের কাছে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশ প্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেয়া না হলে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে ‘হাওয়া’র ছাড়পত্র বাতিল করে দেশে ও বিদেশে প্রচার, সম্প্রচার ও প্রদর্শন সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি করা হয়েছে।
সেন্সর বোর্ড পুনর্গঠন করে এর সদস্য হিসেবে বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের সদস্য, আইনজীবী ও পরিবেশবিদদের অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানানো হয় নোটিশে।
এতে আরও বলা হয়, ভবিষ্যতে কোনো সিনেমার ছাড়পত্র দেয়ার আগে এতে খুনের দৃশ্য, অশ্লীল গালি এবং বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২-এর কোনো ধারার লঙ্ঘন যেন না হয়, সে বিষয়ে বিশেষভাবে দৃষ্টি রাখতে হবে।
নোটিশকারী আইনজীবী বলেন, “বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পেয়ে গত ২৯ জুলাই বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহগুলোতে মুক্তি পাওয়া মেজবাউর রহমান সুমন পরিচালিত ‘হাওয়া’ সিনেমায় ট্রলারে থাকা একটি খাঁচায় শালিক পাখি বন্দি অবস্থায় দেখা যায়। একপর্যায়ে সেটিকে হত্যা করে খাওয়ার দৃশ্য দেখানো হয়েছে। ‘হাওয়া’ সিনেমার কয়েকটি দৃশ্য রয়েছে, যা বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করেছে।“বন্য প্রাণীসংক্রান্ত এ ধরনের অপরাধের ফলে সাধারণ মানুষ পাখি শিকার, খাঁচায় পোষা ও হত্যা করে খাওয়ায় উৎসাহিত হবে। এই দৃশ্য ধারণের জন্য বন বিভাগের কোনো অনুমতিও নেয়া হয়নি। বন্য প্রাণী হত্যা এবং খাওয়ার দৃশ্য দেখে মানুষ মনে করতে পারেন যে এটা করা যায়। তারা এগুলো দেখে উৎসাহিত হতে পারেন।”
তিনি বলেন, “সিনেমা-নাটকে ধূমপানের দৃশ্যে যেমন লেখা থাকে যে এটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, ‘হাওয়া’ সিনেমার ওই অংশে এই ধরনের কোনো বার্তা ছিল না। ইতোমধ্যে বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের চার কর্মকর্তা ‘হাওয়া’ সিনেমাটি দেখে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২-এর ধারা ৩৮(১), ৩৮(২), ৪০ ও ৪৬ লঙ্ঘনের সত্যতা পেয়ে ১৭ আগস্ট বিজ্ঞ আদালতে মামলা করেছে। এ ছাড়া ‘হাওয়া’ সিনেমায় বেশ কয়েকটি খুনের দৃশ্য রয়েছে, যা অতি ভয়ংকর তথা ভায়োলেন্সপূর্ণ।
“পুরো ‘হাওয়া’ সিনেমায় নারী চরিত্রকে নেতিবাচক হিসেবে তুলে ধরার পাশাপাশি অসংখ্য অশ্লীল গালি ব্যবহার করা হয়েছে, যা পরিবারের সদস্যবৃন্দ বিশেষ করে অপ্রাপ্ত বয়স্কদের দেখা মোটেও উচিত নয়। এহেন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে শিশু-কিশোররা, তরুণ-তরুণীরা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হতে পারে, যা সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। অথচ ‘হাওয়া’ সিনেমার কোথাও অপ্রাপ্তবয়স্কদের দেখা নিষেধ—এই কথাটিও উল্লেখ নাই। এই ধরনের চলচ্চিত্র শুধু বাংলাদেশেই নয়, বহির্বিশ্বেও প্রচার, সম্প্রচার ও প্রদর্শন হলে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণার জন্ম দেবে।”