আলোচিত চলচ্চিত্র ‘হাওয়া’র পরিচালক মিসবাউর রহমান সুমনের নামে মামলা করা হয়েছে। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ লংঘনের অভিযোগে এ মামলা করেছে বন বিভাগের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট।
বুধবার (১৭ আগস্ট) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলাটি করা হয়। সন্ধ্যায় বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের ওয়াইল্ডলাইফ ইন্সপেক্টর অসীম মল্লিক গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ এর ধারা ৩৮ (১-২), ৪১ ও ৪৬ লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা করেছে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। মামলায় বাদী হয়েছেন বন্যপ্রাণী পরিদর্শক নারগিস সুলতানা। সাক্ষী করা হয়েছে তদন্ত কমিটিতে কাজ করা অপর তিন সদস্য আব্দুল্লাহ আস সাদিক, অসীম মল্লিক ও রথিন্দ্র কুমার বিশ্বাসকে।
গত ২৯ জুলাই হাওয়া চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়। মুক্তির পর একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত চলচ্চিত্রটির রিভিউতে জানা যায়, এই চলচ্চিত্রে একটি পাখিকে হত্যা করে চিবিয়ে খেয়েছেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী।
রিভিউতে বিস্তারিত বর্ণনা করে লেখা হয় ‘মাছ ধরা বোট নয়নতারার সরদার চান মাঝি একটা পাখি পোষে। নিজে পানি পানের সময় পাখির খাঁচায়ও সে পানি ঢেলে দেয়। নিয়ম করে খেতে দেয় পাখিটিকে। আবার পথ হারিয়ে এই শালিককে উড়িয়ে দেয় সে। পোষা পাখি ফিরে না আসায় আশা খোঁজে। তারপর পাখি ফিরে আসে। সেটিকে পুড়িয়ে উদরস্থ করতেও সময় লাগে না চানের। হলভর্তি দর্শক চোখমুখ কুঁচকে চঞ্চল চৌধুরীর চিবিয়ে চিবিয়ে পোষা পাখির হাড়-মাংস খাওয়া দেখেন। তীব্র রোমাঞ্চ আর ঘৃণা নিয়ে তাকান। দৃশ্যটি তাদের মাথায় গেঁথে যায় অনেক দিনের জন্য।’
রিভিউ প্রকাশের পর হাওয়া চলচ্চিত্রে একটি শালিক পাখিকে খাঁচায় আটকে রাখা ও এক পর্যায়ে হত্যা করে খাওয়ার দৃশ্য দেখানোর মাধ্যমে বন্যপ্রাণী আইন লঙ্ঘন হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন অনেকে। তারপর গত ১০ আগস্ট এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দেয় দেশে পরিবেশ ও প্রকৃতি নিয়ে কাজ করা ৩৩টি সংগঠনের সমন্বিত প্রয়াস বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোট (বিএনসিএ)। এর পরদিন প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে চলচ্চিত্রটি দেখে আইন লঙ্ঘনের প্রমাণ মিলেছে বলে জানান বন অধিদপ্তরের গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
হাওয়া চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী, নাজিফা তুষি, শরিফুল রাজ, সুমন আনোয়ার, সোহেল মণ্ডল, নাসির উদ্দিন খান, রিজভী রিজু প্রমুখ।