পাঁচ বছর আগে ঢাকা জেলার দোহারে শিখা আক্তারকে হত্যার দায়ে স্বামী রুহুল আমিনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। লাশ গুমে সহায়তা করায় রুহুল আমিনের বাবা মনোয়ার হোসেন, মা আছমা বেগম ও ভাই মারুফ খানকে সাত বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে তাদের আরও তিন মাস কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) ঢাকার অতিরিক্ত প্রথম দায়রা জজ মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামের আদালত এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে হাজির হন। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানান সংশ্লিষ্ট আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর দীপক কুমার দেব।
রায়ে সন্তুষ্টি জানিয়ে রুনু আক্তার বলেন, রুহুল আমিনের মা আছমা বেগম হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী। কম করে হলেও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হলে আরও খুশি হতাম।
জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৬ মে রুহুল আমিনের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধন হন শিখা। ৩ আগস্ট বিভিন্ন মালামাল দিয়ে তাকে শশুর বাড়িতে পাঠানো হয়। মালামাল দেখে পছন্দ হয়নি শিখার শ্বশুর বাড়ির লোকজনের। এজন্য তারা শিখার মা রুনু আক্তারের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। রুনু আক্তার তার মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরদিন স্বামীকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি আসে শিখা। রাতে মায়ের সঙ্গে ফোনে অনেকক্ষণ কথা হয়। ৬ আগস্ট শিখার বাবা নাস্তা নিয়ে তার শ্বশুরবাড়ি যায়।
তখন আছমা বেগম তাকে জানান শিখাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। রুহুল তার শ্বশুরকে জানায়, রাতে শিখার সঙ্গে ঝগড়া হয়েছে। শিখার মায়ের সন্দেহ হয় শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে হত্যা করে লাশ গুম করেছে। পরে রুহুল আমিনের বাড়ির পাশের পুকুর থেকে ৬ আগস্ট বিকেল পৌনে ৪টার দিকে শিখার লাশ পায় পরিবার। এ সময় শিখার গলায় ওড়না কাপড় দিয়ে সিলভারের কলসীর সঙ্গে বাঁধা ছিল।
এ ঘটনায় শিখার মা রুনু আক্তার ৬ আগস্ট দোহার থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর আদালতে চার জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন দোহার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ইয়াসিন মুন্সী। ২০১৯ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ১৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।