জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আবাসিক হলের লিফটের অভ্যন্তরে সিগারেট খেতে নিষেধ করায় এক শিক্ষার্থীকে মারধর এবং প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে জাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির এক সদস্যের বিরুদ্ধে।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ আবাসিক হলে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত পারভেজ মোশাররফ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯ ব্যাচের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের শিক্ষার্থী। অভিযুক্তের শাস্তি ও নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ভুক্তভোগী নাইমুর রহমান দুর্জয় হল প্রভোস্ট বরাবর একটি লিখিত অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮ত ব্যাচের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী।
অভিযোগপত্র ও ভুক্তভোগী থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে অভিযুক্ত পারভেজ সিগারেট নিয়ে লিফটে প্রবেশ করছিলেন। এসময় ভুক্তভোগী নাইমুর লিফটে সিগারেট নিয়ে উঠলে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে- এমন কথা বলে সিগারেট নিয়ে প্রবেশ করতে নিষেধ করেন। এসময় দুজনের মধ্যে কিছুক্ষণ কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে পারভেজ ক্ষিপ্ত হয়ে নাইমুরকে মারধর করেন। মারধর শেষে তাকে শিবির ট্যাগ দেয় এবং পরবর্তীতে তাকে হলের ভেতরে পেলে আরও মারবে বলে হুমকি দেয়।
ঘটনার বর্ণনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নাইমুর রহমান দুর্জয় বলেন, আমার ক্যান্ডিডেট আসায় তাকে বিদায় দিয়ে রুমে ফিরছিলাম। আমি তাজউদ্দীন হলের ৪নং লিফট থেকে বের হওয়ার সময় দেখি একটা ছেলে সিগারেট হাতে লিফটের ভিতরে প্রবেশ করে। তখন আমি তাকে বলি হল কর্তৃপক্ষ থেকে নিষেধ আছে লিফটে সিগারেট খাওয়া যাবে না, এটা বিপজ্জনক। তখন সে উত্তেজিত হয়ে যায়। তার পরিচয় জানতে চাইলে সে নিজেকে মাইক্রোবায়োলজি ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দেয়। তখন আমি আমার পরিচয় দেই। আমি ৪৮তম ব্যাচের লোকপ্রশাসনের শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী নাইমুর রহমান আরও বলেন, সে আমার জুনিয়র এটা জানার পরে সে আরও ক্ষিপ্র হয়ে আমাকে তুইতোকারি শুরু করে। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে বার বার শিবির ট্যাগ দেয় এবং আমার গায়ে হাত তোলে। আশেপাশের লোকজন তখন আমাদের আলাদা করে দেয়। সে চলে যাওয়ার সময় আমাকে হলে পেলে ইচ্ছামতো মারবে বলে হুমকি দিয়ে যায়। এ ঘটনায় আমি অনিরাপদবোধ করছি এবং আমি এর বিচার চাই।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে পারভেজ মোশাররফের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. লুৎফুল এলাহী জানান অফিস বন্ধ থাকায় তিনি অভিযোগপত্র হাতে পাননি। তবে তিনি বলেন, আমাকে ফোন দিয়েছিল ঐ শিক্ষার্থী। ঘটনাটি আমি জেনেছি। আমাদের হল অফিস বন্ধ আছে, আগামীকাল খুলবে। ভুক্তভোগী যদি লিখিত অভিযোগ দেয় তাহলে আমরা একটা তদন্ত কমিটি করবো। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
সোহাগ/মিরর