মেয়েদের মিয়ানমারে না পাঠানোর ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় এখন বেশ চাপে আছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। ‘টাকার অভাবে’ মেয়েদের অলিম্পিক বাছাইয়ে না পাঠানোর অজুহাত এখন আর টিকছে না। খোদ ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেছেন, সালাউদ্দিন ইচ্ছাকৃতভাবে এই কাজ করেছেন।
কেন করেছেন, সেই জবাবদিহি চাওয়ার কথাও বলেছেন মন্ত্রী। এ ছাড়া বিনা উসকানিতে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে আক্রমণ করে সালাউদ্দিন এখন মহাবিপদে।
এই মেয়েরাই গত বছর সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে দেশের সবচেয়ে সফল ক্রীড়া সংস্থা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। মেয়েরা সেই টাকা পেয়েছেন গত সপ্তাহে। কিন্তু কেন? বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন দাবি করেছিলেন, বিসিবির টাকার ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না! কিন্তু মেয়েদের দেওয়া বিসিবির চেকে তারিখ দেওয়া ছিল গত বছরের ৪ অক্টোবরের। সুতরাং বিসিবি সম্পর্কে কাজী সালাউদ্দিনের বক্তব্য যে অসত্য তার প্রমাণ পাওয়া যায় এতেই। কিন্তু কেন বাফুফের হাতে পুরস্কারের টাকা তুলে দেয়নি বিসিবি? কেনই বা মেয়েদের হাতেই তুলে দেওয়া হলো?
বিসিবির কেউই এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি নন। তাদের বক্তব্য, যেহেতু মেয়েরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, তাই তাদের হাতেই পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, ঠিক এ কারণেই বিসিবির টাকা গ্রহণ করতে এত দেরি করেছে বাফুফে! মেয়েদের পুরস্কারের টাকা নিতে কেন তাদের আগ্রহ ছিল না―সাম্প্রতিক একটা ঘটনায় তার প্রমাণ পাওয়া যায়। কিছুদিন আগেই নারী ফুটবলাররা বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আন্দোলন করছিল। এর মাঝেই ফাঁস হয়ে যায় টাকার অভাবে তাদেরকে অলিম্পিক বাছাইয়ে না পাঠানোর খবর।
এই খবর জেনে বাফুফের সহসভাপতি আতাউর রহমান মানিক বিদেশে থেকেই চ্যাম্পিয়ন মেয়েদের জন্য তার ব্যক্তিগত পুরস্কারের টাকা বাফুফেকে দিয়েছিলেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেই টাকা দিয়ে মেয়েদের বেতন দিয়েছে বাফুফে! পুরস্কারের টাকা দিয়ে কিভাবে বেতন দেওয়া যায়―তার কী জবাব দেবেন সালাউদ্দিন? এসব কারণেই হয়তো সালাউদ্দিনের বাফুফের হাতে মেয়েদের পুরস্কারের টাকা তুলে দেয়নি বিসিবি। কাজী সালাউদ্দিনের ওপর থেকে বিশ্বাস-আস্থা হারিয়েছে সমর্থক থেকে শুরু করে সবাই। বাফুফে সভাপতি হিসেবে কাজী সালাউদ্দিনের ভাগ্যে কী আছে, সেটা সময়ই বলে দেবে!