মুমিনরা সব সময় আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পিত। এ কারণে তারা জীবনের প্রতিমুহূর্তে আল্লাহকে স্মরণ ও তার জিকির করেন। মুমিনদের প্রতিটি কাজ-কর্মে পুণ্য ও সওয়াব দিয়ে থাকেন মহান আল্লাহ।
মুমিনদের জীবন-যাপন কেমন হবে তা নির্ধারণ করে দিয়েছেন আল্লাহ। এ কারণে রাত্রিযাপনেও কিছু আদব ও শিষ্টাচার দিয়েছেন। এবার তাহলে রাতে ঘুমানোর মুহূর্তের কিছু আমল জেনে নেয়া যাক।
ঘুমানোর প্রস্তুতি: মহানবী (সা.) ঘুমানোর আগে সতর্কতা হিসেবে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছেন। বিশ্বনবী (সা.) হাদিসে বলেন, ‘রাতে পানাহারের পাত্রগুলো তোমরা ঢেকে রেখো। ঘরের দরজা বন্ধ রেখো। আর সন্ধ্যায় বাচ্চাদের ঘর থেকে বের হতে দিয়ো না। কেননা, এই সময় জিনরা ছড়িয়ে পড়ে ও কোনো কিছুকে দ্রুতই প্রভাব করে। ঘুমের আগে বাতিগুলো নেভাবে। কারণ, অনেক সময় ছোট ক্ষতিকার ইঁদুর প্রজ্জ্বলিত সলিতাযুক্ত বাতি টেনে নেয় এবং ঘরের মানুষদের জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেয়।’ (বুখারি, হাদিস নং: ৩৩১৬)
ঘুমানোর জায়গা: একাকী নির্জন কোনো স্থানে বা ঘরে ঘুমানোর বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে হাদিসে। ইবনে ওমর (রা. থেকে বর্ণিত, ‘হযরত মুহাম্মদ (সা.) কোনো ঘরে একাকী রাতযাপন ও সফর করতে নিষেধ করেছেন।’ (আহমাদ, হাদিস নং: ৫৬৫০)
এছাড়া বাসা কিংবা বাড়ির ছাদেও কখনো শোয়া বা ঘুমানো উচিত না। এ বিষয়ে নবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যিনি রাতে বেষ্টনীবিহীন ছাদে ঘুমায় (কোনো দুর্ঘটনা হলে) তার বিষয়ে (আল্লাহর) কোনো জিম্মাদারি নেই।’ (আবু দাউদ, হাদিস নং: ৫০৪১)
বিছানা পরিষ্কার করা: ঘুমানোর আগে বিছানা ঝেড়ে পরিষ্কার করা উচিত। হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যদি শয্যায় যায় তাহলে যেন লুঙ্গির মাধ্যমে বিছানা ঝেড়ে নেয়। কেননা, সে জানে না তার অনুপস্থিতিতে বিছানাতে পীড়াদায়ক কিছু রয়েছে কিনা। এরপর এই দোয়া পড়বে, হে আমার রব, আপনার নামে শরীর বিছানায় রাখলাম এবং আপনারই নামে আবার আমি উঠব। (বুখারি, হাদিস নং: ৬৩২০)
ঘুমানোর আগের আমল: রাতে ঘুমানোর আগে কিছু আমল রয়েছে। এবার তাহলে আমলগুলো জেনে নেয়া যাক-
আয়াতুল কুরসি তেলাওয়াত: বিশ্বনবী (সা.) বলেন, ‘তুমি যখন শয্যা গ্রহণ করবে সেই সময় আয়তুল কুরসি পাঠ করবে। এতে আল্লাহর তরফ থেকে সব সময় তোমার জন্য একজন রক্ষক থাকে এবং তোমার কাছে সকাল পর্যন্ত শয়তান আসতে পারবে না। (বুখারি, হাদিস নং: ২৩১১)
সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত: নবী (সা.) বলেণ, ‘কেউ যদি রাতে সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত তেলাওয়াত করে তাহলে তার জন্য যথেষ্ট হবে।’ (বোখারি ও মুসলিম)।
এছাড়াও রাতে ঘুমানোর আগে সূরা কাফিরুন, ইখলাস, নাস্ ও ফালাক পাঠ করে ফুঁ দেয়া সুন্নত।