পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে একে.এম মঞ্জুরুল হক নামে সাবেক এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে জাল দলিল তৈরি করে শতবর্ষী পুরনো মসজিদ ও মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানের জমি দখলের পাঁয়তারার অভিযোগে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) দুপুর তিনটায় দেবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের পূর্ব মুন্সিপাড়া এলাকায় সংলগ্ন শহীদ আব্দুল মান্নান সড়কে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে পূর্ব মুন্সী পাড়া জামে মসজিদের মুসল্লি, কমিটির সদস্য ও সাধারণ জনগণ অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সাবেক ইউপি সদস্য একে.এম মঞ্জুরুল হক দীর্ঘদিন ধরে পূর্ব মুন্সিপাড়া জামে মসজিদ ও কবরস্থানের জমি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন। সম্প্রতি মসজিদে মুসল্লিদের নামাজের জায়গা সংকুলান না হয় মসজিদের সংস্কার কাজ শুরু করলে মুঞ্জুরুল হক আদালতে গিয়ে জমির মালিকানা নিয়ে মামলা করেছেন।
এছাড়া তিনি বারবার পুলিশকে ব্যবহার করে সংস্কার কাজে বাঁধা সৃষ্টি করছেন। এমদাদুল হক নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, আমাদের পূর্বপুরুষদের দান করা জমি জাল কাগজপত্র দেখিয়ে দখলের চেষ্টা চলছে। সম্প্রতি মসজিদের সংস্কার কাজ শুরু হলে মঞ্জুরুল হক থানায় অভিযোগ করে পুলিশ পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করিয়ে দিয়েছেন।
আমরা এ অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাই। গোলাম মোস্তফা নামে অপর এক বাসিন্দা বলেন, মসজিদ ও কবরস্থানের জমি দখলের পাঁয়তারা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না। আমরা চাই প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিক, যাতে ধর্মীয় স্থানের পবিত্রতা রক্ষা হয়।
মসজিদ কমিটির সভাপতি লাবু সরকার বলেন, ১৯৬২ সালের এস এ খতিয়ানে এই মসজিদ ও কবরস্থানের কথা উল্লেখ আছে। মসজিদের সংস্কার কাজ শুরু করলে মঞ্জুরুল হক ভুয়া দলিল নিয়ে আদালতে গিয়ে জমির মালিকানা দাবি করে মামলা দায়ের করেন।
এছাড়া তিনি বার বার পুলিশ পাঠিয়ে মসজিদের সংস্কার কাজ বন্ধ করে দিচ্ছেন। থানায় বসার জন্য বলা হলেও তিনি থানায় আসেন না এবং তার কাগজপত্র দেখান না।
এবিষয়ে অভিযুক্ত সাবেক ইউপি সদস্য একে. এম মঞ্জুরুল হক বলেন, আমরা মসজিদের কাজে কোন বাঁধা দেই নাই। আমাদের সম্পত্তিকে তারা মসজিদের নাম বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করে আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেছে। এই জমির উপর ২০১০ সালে আদালতে বাটোয়ারা মামলা হয়। এই মামলায় আমরা তিন বার রায় পাই।
পুলিশ গিয়ে বার বার মসজিদের সংস্কার কাজ বন্ধ করে দিচ্ছে এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোয়েল রানা বলেন, মসজিদের পাশের জমি গুলো নিয়ে আদালতে একাধিক মামলা চলমান রয়েছে। মসজিদের সংস্কার কাজ বন্ধ করতে কখনো পুলিশ যায় নি।
যখন কেউ ফোন করে বলে আমার জমিতে জোর করে স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে তখন পুলিশ গিয়ে দুই পক্ষকে বসে সমাধান করার আহ্বান জানায়। এলাকাবাসীর প্রত্যাশা প্রশাসন এবিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিবে যাতে কবরস্থান ও মসজিদের জমি রক্ষা করা যায়।