উনিশ শতকে বিশেষ করে ব্রিটিশ পিরিয়ড কিংবা ৭১ পূর্ববর্তী সময়ে বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ দরিদ্র-সীমার নিচে বসবাস করতো। তখন দেখা যেতো কৃষকের পরিবার বা দিনমজুর দের পরিবারের খাবার এর খরচ উঠাতেই হিমসিম খেতো।
তখন বাড়ির মেয়েদের পোশাক কিনে দিতে পারতো না, দুইটা শাড়ি নারীরা এবেলা -অবেলা করে পড়তেন! ব্লাউজ কেনার টাকা না থাকায় তারা ব্লাউজ ছাড়াই শাড়ি পড়তেন তাও শরীর ঢেকেই! সেটি তো ছিলো অভাবের কারণে পোশাক না থাকার কারণে।
আর আমি কিছু কিছু জায়গায় দেখেছি মা বোন রা বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছে, হাতে প্রচন্ড ব্যাথা ব্লাউজ পড়তে, খুলতে অসুবিধা হয় তখন তারা ব্লাউজ ছাড়া শাড়ি পড়তেন!
তাহলে প্রশ্ন হলো এরা কারা? এরা কেনো ব্লাউজ ছাড়া শাড়ি পড়েছে? এরা কি দরিদ্র? দরিদ্র হয়ে থাকলে এদেশে অনেক বিত্তশালী মানুষ যাকাত দেয়, সেখানে গেলে নিঃসন্দেহে কাপড় পাবে। আমরা এয়ারপোর্টে মানবতার দেয়াল করেছি, সেখানে গেলে কাপড় পাবে।
আসলে কি এরা দরিদ্র নাকি এরা অসভ্য! পশুর সাথে মানুষের সবচেয়ে বড় পার্থক্য দুই জায়গায়! মানুষের বিবেক এবং লজ্জা আছে পশুর এই দুইটা নেই! এদের তো বিবেক এবং লজ্জা কোনোটাই নেই! তাহলে এরা সম্ভাবত পশু! কিন্তু পশুর জায়গা জঙ্গলে, শাহবাগে নয়!
পোশাকের স্বাধীনতাঃ প্রত্যেকটা মানুষের অবশ্যই পোশাকের স্বাধীনতা আছে! তুমি দরকার হলে পোশাক ছাড়া থাকো তবে সেটা ঘরের ভেতরে! কারণ আমরা একটি সভ্য সমাজে বসবাস করি! এ সমাজ এখনো নারীদের সম্মানের চোখে দেখে! এখনো এদেশের ৯২ শতাংশ নারীরা পোশাকের শালীনতা বজায় রেখে চলে! তোমরা গুটি কয়েক বন মানুষের জন্য ৯২ শতাংশ নারীদের অবমাননা, অপমান করার কোনো যুক্তি দেখিনা!
বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিঃ শালীন পোশাকে নারীরা চলাচল করবে এটিই বাঙালির ঐতিহ্য, বাঙালির চক্ষুলজ্জা আছে, বাঙালি অত্যন্ত সামাজিক এটি কাল কালান্তর থেকে বাঙালির ঐতিহ্য ধারণ করে আসছে।
বরং তোমরা যে উলঙ্গ কিংবা অর্ধ-উলঙ্গ হবার অনুমতি চাচ্ছো সেটি বাঙালির ঐতিহ্যবিরোধী। আর যদি বলি সংস্কৃতির কথা তবে সঠিক নিয়মে শাড়ি পরে আচল রাখা বাঙালি নারীর সংস্কৃতি। ব্লাউজ ছাড়া শাড়ি বাঙালির সংস্কৃতি নয়, বরং তোমরা যে সংস্কৃতি লালন করছো এটি বর্বর, অসভ্যদের সংস্কৃতি!
সবশেষে তোমাদের পক্ষ হয়ে বলছি, এদের শরীরে সম্ভাবত ডায়ো আছে (এক প্রকার রোগ) তাই এদের পোশাক পড়ে থাকতে অসুবিধে হয়! তাই এদের কে ভাসানচর এর মতো কোনো দ্বীপে রেখে আসা হোক তবুও আমাদের সমাজ জঞ্জালমুক্ত হোক, আমাদের নারীরা সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকুক!
শিবলী মাহাদী ,লেখক ও কলামিষ্ট