বিচারপ্রার্থী জনগণকে সঠিক বিচারিক সেবা দিতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। তিনি বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর প্রতি যদি সত্যিকারের শ্রদ্ধা নিবেন করতে হয়, তাহলে বিচারপ্রার্থী জনগণকে সঠিক বিচারিক সেবা করতে হবে।
শনিবার (৪ নভেম্বর) সুপ্রিমকোর্টের ইনার গার্ডেনে সংবিধান ও সুপ্রিমকোর্টের সুবর্ণজয়ন্তীর সমাপনী এবং সংবিধান দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ফিলিস্তিনের নিপিড়িত জনগণের মানবিক বিপর্যয়ের আশু সমাধানের দাবি জানিয়ে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, তীব্র মানবিক সংকটে পৃথিবী আজ ভুগছে অবর্ণীয় বিষাদে। এ বিশ্ব হারিয়েছে যাদের, তারা হয়তো কেউই চেনেন না আমাদেরকে। তারপরও তারা আমাদের ভাই-বোন, আমাদের স্বজন।
শিশুরা লাশ হয়ে আছে বাবার বাহুতে বা মায়ের কোলে। পৃথিবীর কোথাও একটি রাষ্ট্র নেই তাদের। আমরা মাতৃভাষা, রাষ্ট্র ও সংবিধান পেয়েছি ৩০ লাখ প্রাণের বিনিময়ে। কিন্তু পৃথিবীতে কিছু মানুষ আছে যারা প্রতিনিয়ত আশা করছে শান্তির, আশা করছে ভালোবাসার। এ সময় বিশ্বের যে সকল অঞ্চলে মানবিক সংকট রয়েছে তার সমাধানের আশা প্রকাশ করেন তিনি।
প্রধান বিচারপতি বলেন, সংবিধান গৃহীত হওয়ার দিন ৪ নভেম্বরকে সংবিধান দিবস হিসেবে যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করি ২০২২ সালে। সরকার এই দিনটিকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে। আজকে এই দিবসটি সরকারিভাবে প্রথমবারের মত পালিত হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রতিদিন বিচারকের আসন গ্রহণকালে আমার এবং আমার প্রত্যেক সহকর্মীর হৃদয় আপ্লুত হয় বঙ্গবন্ধুর স্মরণে। এই বিচার প্রার্থীদের জন্যই বঙ্গবন্ধু নিজ তারুণ্য উৎসর্গ করেছেন, প্রয়োজন ত্যাগ করেছেন, অকাতরে জীবন দিয়েছেন।
বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রতি যদি সত্যিকারের শ্রদ্ধা নিবেন করতে হয়, তাহলে এই বিচারপ্রার্থী জনগণকে সঠিক বিচারিক সেবা করতে হবে। তাদের মুখের দিকে তাকালে দেখতে পারবেন, সেখানে ফুটে উঠেছে রাজ্যের আশঙ্কা রেখা। সেই শঙ্কাগুলোকে পরম যত্নে দূর করে দিন। এদের জন্যই বঙ্গবন্ধু ছুটে বেরিয়েছেন বাংলার প্রত্যন্তগ্রামে। এই মানুষগুলো যদি ন্যায় বিচারের সুবাতাসে তীপ্ত হতে পারে তবেই এ মাটির সন্তান হিসেবে প্রকৃত সফলতা পাবো।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- মালদ্বীপের প্রধান বিচারপতি উজ আহমেদ মুথাসিম আদনান, বিশেষে অতিথি ছিলেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। এছাড়াও আপিল বিভাগের বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া সাবেক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিবৃন্দ, সাবেক বিচারপতিবৃন্দ, সিনিয়র আইনজীবীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সংবিধান অলংকরনের জন্য প্রধান শিল্পী হাশেম খান ও আবুল বারক আলভীকে সংবর্ধনা স্মারক তুলে দেন প্রধান বিচারপতি। ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর সংবিধানের খসড়া গৃহিত হয়। এরপর থেকে ৪ নভেম্বর সংবিধান দিবস হিসেবে প্রতিপালন হয়ে আসলেও গত বছর এ দিবসটিকে জাতীয় দিবস ঘোষণা করা হয়।