চেক প্রতারণার অভিযোগে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, তার ছেলে ও গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর, দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক ও প্রকাশকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সিলেটের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর বিচারিক আদালতের বিচারক মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ এ আদেশ দেন।
মামলাটি করেন দৈনিক কালের কণ্ঠের সিলেটের সাবেক ব্যুরো প্রধান আহমেদ নূর। তিনি অভিযোগ করেন, বসুন্ধরা গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ থেকে প্রকাশিত কালের কণ্ঠে তিনি প্রায় সাড়ে ১২ বছর সিনিয়র রিপোর্টার পদমর্যাদায় সিলেট ব্যুরো প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। চাকরির মেয়াদ শেষে দীর্ঘদিন তার সার্ভিস বেনিফিট পরিশোধে গড়িমসি করে কর্তৃপক্ষ। পরে আলোচনা করে কিছু টাকা পরিশোধ করে এবং বাকি অর্থের জন্য জানুয়ারি মাসে ১০টি চেক দেওয়া হয়। তবে এর মধ্যে ৮টি চেক ডিজঅনার হয়, যার মোট অর্থের পরিমাণ ৬ লাখ ১ হাজার ৮২৪ টাকা।
বাদী উকিল নোটিশ পাঠানোর পর আসামিরা তাদের আইনজীবীর মাধ্যমে টাকা পরিশোধের আশ্বাস দিলেও বাস্তবে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে গত বছরের ৫ ডিসেম্বর একটি চেক ও ৩১ ডিসেম্বর বাকি সাতটি চেক ডিজঅনার হওয়ায় দুটি মামলা করেন আহমেদ নূর। আদালত প্রথম মামলায় সমন জারি করলেও আসামিরা হাজির না হওয়ায় বৃহস্পতিবার তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
মামলায় যাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে তারা হলেন—বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, এমডি সায়েম সোবহান আনভীর, কালের কণ্ঠের প্রকাশক ময়নাল হোসেন চৌধুরী, সম্পাদক হাসান হাফিজ, চেক স্বাক্ষরকারী শাহেদ মুহাম্মদ আলী এবং নঈম নিজাম। প্রতিষ্ঠান হিসেবে কালের কণ্ঠকেও মামলায় বিবাদী করা হয়েছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম বলেন, একজন অভিজ্ঞ ও প্রভাবশালী সাংবাদিকের পাওনা পরিশোধ না করে চেক দিয়ে প্রতারণা করা দেশের গণমাধ্যম খাতের জন্য লজ্জাজনক। তিনি জানান, আদালত সমন জারির পর আসামিদের উপস্থিত না থাকায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
বাদী আহমেদ নূর বলেন, “প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে যে প্রতিষ্ঠানে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছি, তাদের বিরুদ্ধে ন্যায্য পাওনা আদায়ের জন্য মামলা করতে হয়েছে—এটা দুঃখজনক। কিন্তু কারও না কারও প্রতিবাদ করতে হয়। আমি সেটিই করেছি। আশা করি, আমার মতো যারা এমন পরিস্থিতির শিকার, তারাও সামনে এগিয়ে আসবেন এবং নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার হবেন।”