কাতার বিশ্বকাপে সবার আগে নক আউট পর্ব নিশ্চিত করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স। তবে গ্রুপ পর্বে তাদের খচখচানি হয়ে থাকল তিউনিসিয়া ম্যাচটি। কারণ এই ম্যাচেই যে পা হড়কেছে ফরাসিদের। অপ্রত্যাশিতভাবে ম্যাচটি ফ্রান্স হেরে গিয়েছে ১-০ গোলে।
তবে তাতে ঘাবড়ে যায়নি ফ্রান্স। কারণ বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের ভাবনা এখন কেবলই নক আউট পর্বে পোল্যান্ড ম্যাচকে ঘিরে। পোলিশরা ১৯৮৬ বিশ্বকাপের পর এই প্রথম নক আউটে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে।
আজ দোহার আল থুমামা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় মুখোমুখি হবে ফ্রান্স ও পোল্যান্ড। এর আগে বিশ্বকাপে দুই দল মুখোমুখি হয়েছিল ১৯৯৪ সালে।
ফ্রান্স-পোল্যান্ড ম্যাচ ছাপিয়ে এটি হতে পারে কিলিয়েন এমবাপ্পে ও রবার্ট লেভানডফস্কি ম্যাচও। বিশ্বকাপে ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের ফর্ম টেনে এনেছেন এমবাপ্পে। এখন অবধি বিশ্বকাপে ৩ গোল করেছেন। সেই সংখ্যা যে পোল্যান্ড ম্যাচে বাড়িয়ে নিতে চাইবেন এমবাপ্পে সেটি না বললেও হয়।
লেভানডফস্কি এখনো সেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। মেক্সিকোর বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে পেনাল্টি মিস করেছেন। পরের ম্যাচ সৌদি আরবের বিরুদ্ধে গোল করে বিশ্বকাপে প্রথম গোলের দেখা পেয়েছেন বার্সেলোনা তারকা।
গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে ২-০ গোলে হেরে গিয়েছিল পোল্যান্ড। সেই ম্যাচে লেভানডফস্কি গোল করার প্রশ্নই উঠে না। কে জানে, পোলিশ তারকা সবটুকু নিংড়ে দিবেন ফ্রান্সের বিরুদ্ধে!
পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, বিশ্বকাপে এখনো অবধি ফ্রান্স-পোল্যান্ড মুখোমুখি হয়েছে একবার। ১৯৮২-তে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে ৩-২ গোলে জিতেছিল পোল্যান্ড। ইউরোর বাছাইয়ে দুই দলের সবশেষ ম্যাচ দুটি ড্র হয়েছিল। পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে সবশেষ সাত ম্যাচে অপরাজিত রয়েছে ফ্রান্স। ৩ জয়ের বিপরীতে ৪টি ম্যাচ ড্র হয়েছে।
গোলরক্ষক সেজেসনি যেন চীনের প্রাচীরের মতো রক্ষা করছে পোল্যান্ডকে। বিশ্বকাপে দুটি পেনাল্টি সেভ করার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন তিনি। সৌদি আরব ও আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে দুটি স্পট কিক ঠেকিয়ে দেন সেজেসনি।
যা তাকে ঠাঁই করে দিয়েছে রেকর্ডের পাতায়। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাড ফিডেল ২০০২ এবং ইয়ান তামাসেভস্কি ১৯৭৪ বিশ্বকাপে দুটি করে স্পট কিক ঠেকিয়ে দেন। তাই ফ্রান্সকে জিততে হলে পোলিশ গোলরক্ষকের বিরুদ্ধেও জিততে হবে!
দেখে নেওয়া যাক আরও কিছু পরিসংখ্যান।
* বিশ্বকাপের আগের তিন আসরে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন দলগুলো নকআউট পর্বের আগেই বাদ পড়েছিল। ২০০৬ সালে ব্রাজিলের পর এবার প্রথম শিরোপাধারী দল হিসেবে গ্রুপ পর্বের বৈতরণী পার করেছে ফ্রান্স।
* পোল্যান্ডের বিপক্ষে সব মিলিয়ে সবশেষ সাত ম্যাচে অপরাজিত আছে ফ্রান্স (জয় ৩, ড্র ৪)। দলটির বিপক্ষে ফরাসিরা সবশেষ হেরেছিল ১৯৮২ সালে প্রীতি ম্যাচে (৪-০ গোলে)।
* ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপে নকআউট পর্বে জায়গা করে নিয়েছে পোল্যান্ড। ১৯৮৬ আসরে শেষ ষোলোয় তাদের ৪-০ গোলে হারিয়েছিল ব্রাজিল।
* টাইব্রেকার বাদে যুক্তরাষ্ট্রের ব্র্যাড ফ্রিডেল (২০০২) ও ইয়ান তমাসেভস্কির (১৯৭৪) পর তৃতীয় গোলরক্ষক হিসেবে বিশ্বকাপে দুটি পেনাল্টি সেভ করার কীর্তি গড়েছেন পোল্যান্ডের ভয়চেখ স্ট্যাসনি। সৌদি আরব ও আর্জেন্টিনার বিপক্ষে স্পট কিক ঠেকান তিনি।
* আসরে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচে জাল অক্ষত রাখার পর আর্জেন্টিনার বিপক্ষে (২-০) গ্রুপের শেষ ম্যাচে গোল হজম করে পোল্যান্ড।
* এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে একবারই সাক্ষাৎ হয়েছে ফ্রান্স ও পোল্যান্ডের। ১৯৮২ আসরের তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে ৩-২ গোলে জিতেছিল পোলিশরা। দুই দলের সবশেষ দুটি ম্যাচ ছিল ১৯৯৬ ইউরো বাছাইয়ে, উভয় ম্যাচই ড্র হয়েছিল।