কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:
দেশের বৃহত্তম ঈদুল আজহার জামাতের জন্য প্রস্তুত ঈদগাহ ময়দান। এবার ঈদুল আজহার ১৯৭তম জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এবারো নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চলছে ঈদগাহ মাঠের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে।
ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯ টায় এতে ইমামতি করবেন জেলা শহরের বড়বাজার জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা হাফেজ মো. শোয়াইব বিন আব্দুর রউফ। ঈদ জামাতে জায়নামাজ ছাড়া আর কিছু সঙ্গে না আনতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (১৫ জুন) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শোলাকিয়া মাঠ পরিদর্শন করেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ, অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আলিমুজ্জামান, র্যাব-১৪, সিপিসি-২ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার, স্কোয়াড্রন লিডার মো. আশরাফুল কবিরসহ জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
শোলাকিয়ায় ২০১৬ সালের জঙ্গি হামলাকে মাথায় রেখে প্রতিবছর বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রশাসন। এবারও অনেকটা সেরকমই থাকছে। ইতোমধ্যে শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও র্যাবের কর্মকর্তারা একাধিকবার পরিদর্শন করেছেন শোলাকিয়া ময়দান। ঈদের দিন আনসার, পুলিশ, র্যাবের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন থাকবে। সাদা পোশাকেও থাকবে পুলিশের সদস্যরা।
র্যাব-১৪ অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আলিমুজ্জামান বলেন, ঈদ জামাতকে ঘিরে নিরাপত্তা দিতে আমরা প্রস্তুত। প্রতি বছরের মতো এবারো আমরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদানের ব্যবস্থা করেছি।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ জানান, নিরাপত্তার দিক থেকে কোনো ঝুঁকি না থাকলেও নিরাপত্তা ব্যবস্থাকেই শোলাকিয়ায় প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। মাঠে থাকবে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তিনি আরোও বলেন, দুই প্লাটুন বিজিবি, বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র্যাব, আনসার সদস্যের সমন্বয়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি মাঠে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা নজরদারি করবেন। এছাড়াও শহরসহ মাঠের প্রবেশ পথগুলোতে থাকছে সিসি ক্যামেরা ও ওয়াচ টাওয়ার। নামাজ শুরুর আগে পুরো মাঠ তল্লাশি করা হবে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে। থাকবে পাঁচটি আর্চওয়ে।
ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, ঈদ জামাত আয়োজনের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। মুসল্লিদের নিরাপত্তা ও ঈদজামাত নির্বিঘ্ন করতে যা যা করার সবই করা হয়েছে। তিনি আরোও জানান, শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে অংশগ্রহণের সুবিধার্থে ভৈরব-কিশোরগঞ্জ-ভৈরব ও ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ লাইনে ‘শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল’ নামে দুটি স্পেশাল ট্রেন চলাচল করবে।
উল্লেখ, ১৮২৮ সনে ঈদজামাতের মধ্য দিয়ে শোলাকিয়া ঈদগাহের গোড়াপত্তন হয়। জনশ্রুতি আছে, শাহ সুফি সৈয়দ আহমদের ইমামতিতে প্রথমবার ঈদের জামাতে ‘সোয়া লাখ’ মুসল্লি নামাজ আদায় করেন। আবার কারও মতে, এ পরগণায় খাজনা আদায়ের পরিমাণ ছিল সোয়া লাখ টাকা। সে কারণে এর নামকরণ হয় শোয়ালাখিয়া থেকে শোলাকিয়া।