ভারতের পার্লামেন্টের ইতিহাসে এত ন্যাক্কারজনক নোংরা এবং কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য এর আগে কোনো সংসদ সদস্য দিয়েছেন বলে ইতিহাসে উল্লেখ নাই। শুভেন্দু অধিকারী এমন মন্তব্য পুরো ভারত জুড়ে সমালোচনা সৃষ্টি হয়। কাণ্ডজ্ঞানহীন মন্তব্যের সময় ভারতের বিরোধী দলীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। যার মধ্যে রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ও সরকারদলীয় নরেন্দ্র মোদী অমিত শাহসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত ছিলেন।
বিজিবির কিছু উগ্রপন্থী নেতাকে এ সময় বক্তব্যের স্বপক্ষে টেবিল চাপড়ে সমর্থন দিতে দেখা যায়। তবে স্পিকার এই বক্তব্যের চরম বিরোধিতা করেছেন এবং শুভেন্দুকে তিরস্কার করেছেন। শুভেন্দু অধিকারী বেশ কিছুদিন ধরেই ভারতে বাংলাদেশের বিপক্ষে চরম আপত্তিজনক বক্তব্য দিয়ে দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে ওই সময় সংসদে উপস্থিত মমতা ব্যানার্জিকে সম্পূর্ণ নিশ্চুপভাবে বসে থাকতে দেখা যায়। শুভেন্দু অধিকারী ভারতীয় জনতা পার্টি পশ্চিমবঙ্গের সভাপতি হলেও উদ্ভট দাঙ্গা বাঁধানো মন্তব্যের জন্য তিনি চরমভাবে খোঁজ তার রাজ্যেই ঘৃণিত। বিজেপি অফিসিয়ালি কখনোই তার বিরুদ্ধে কোনো অ্যাকশন নেয়নি। বরং তার মন্তব্যকে উস্কে দিচ্ছে বিজেপি দল নিজেই।
প্রায় সময়ই নানা ইস্যুতে মন্তব্য করে আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম দেন পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। এবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় জনরোষে পড়েছেন এই বিজেপি নেতা। জনরোষের মুখে শিকার হয়েছেন মারধরেরও।
জানা গেছে, সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের নন্দিগ্রামে এক পথসভায় গিয়েছিলেন তিনি। ভারতীয় পার্লামেন্টে তৃণমূল নেত্রী মমতাকে নিয়ে কুরুচিকর ও অপমানজনক মন্তব্যের জেরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন দলের নেতাকর্মীরা। পথসভায় শুভেন্দু অধিকারী এলে তার ওপর চড়াও হোন মাঠের কর্মীরা। জানা গেছে, জুতা দিয়েও মারা হয় শুভেন্দুকে।
এর আগে ভারতীয় পার্লামেন্টে মমতাকে উদ্দেশ্য করে শুভেন্দু বলেন, শরীর থাকলে জ্বর যেমন হয়, তেমনি একটু-আধটু ধর্ষণও হয়। এ নিয়ে বাড়াবাড়ির কি হলো। এমনকী এই বিজেপি নেতা ড. ইউনূসকেও বাজে মন্তব্য করেছেন। এর সঙ্গে মমতাকে তুলনা করে বলেন, মমতাও একজন বাজে মহিলা। বাংলাদেশের রাজাকার ও হেফাজত নেতা ভারতকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করতে চায়, মমতা হলো তাদের সঙ্গী।
তার এমন মন্তব্যের কারণে পার্লামেন্ট জুড়ে হট্টগোল শুরু হয়। বিক্ষোভে ফেটে পড়েন সংসদ সদস্যরা। খোদ স্পিকারই শুভেন্দুকে থামিয়ে দেন বক্তব্যের মাঝপথে। এরপরে নন্দিগ্রামে পথসভায় এসে মারধরের শিকান হন তিনি। জানা গেছে, মারধর থেকে রক্ষা পেতে একপর্যায়ে নন্দিগ্রাম থানায় আশ্রয় নেন তিনি। শেষমেষ পুলিশের নিরাপত্তায় জনরোষ থেকে রক্ষা পান শুভেন্দু।
তার এমন মন্তব্যের নেটদুনিয়া থেকে শুরু করে সব জায়গায় শুরু হয় এখন সমালোচনা। অনেকেই তাকে পাগল, বেয়াদব, হিংস্রুক, নরপিশাচ ও নরকিট বলে গালি দিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। লিখেন, তার মতো বদ্য পাগল মনে হয় কোনো রাজনীতিবীদ হতে পারে না। এই পাগলের রাজনীতি ছেড়ে দেওয়া উচিত। বিজেপি নামেই পাগলের দল। তাদের দ্বারা জনগণের কোনো উন্নয়ন হতে পারে না। বরং তারা বর্হিবিশ্বে শত্রুতা সৃষ্টি করে।
মো. আল আমিন হোসাইন নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, এই পাগল ও ময়ূর রঞ্জনের কারণে বাংলাদেশ ভারতের সম্পর্ক নষ্ট হয়েছে। আবার অনেকে তাকে ভারত আওয়ামী লীগ নেতা বলে স্ট্যাটাস দেন।
বাংলাদেশ নিয়ে নানারকম কটুক্তিমূলক বক্তব্য করতে দেখা গেছে এই বিজেপি নেতাকে। তার বক্তব্যের কারণে বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক আরও খারাপ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন অনেকে। বাংলাদেশের ‘বৈধ’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই, এমনটাই দাবি করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। এছাড়াও ভারত বাংলাদেশ সৃষ্টি করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সূত্র: ইনকিলাব