পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে আবারও এক ভয়াবহ ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। আগামী ৩ জুলাই ১৯০০ সালের শাসনবিধি বৈধকরণ এবং আদিবাসী স্বীকৃতির সাথে সংশ্লিষ্ট দুইটি মামলা মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের রিভিউ আদালতে শুনানি হবে।
এই উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিচ্ছিন্নতাবাদী আঞ্চলিক নেতা ও তাদের সমর্থকেরা ব্যাপকভাবে তৎপরতা শুরু করেছে। এর অংশ হিসেবে বেইলি রোডে আঞ্চলিক পরিষদের ঢাকা কার্যালয়ে পাহাড়ের আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ও তাদের সমর্থক পেশাজীবীরা একের পর এক বৈঠক করছে।
এ সকল বৈঠকে এডভোকেট গৌতম দেওয়ান, অ্যাডভোকেট নিকোলাস চাকমা, সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল পারিকর চাকমা সহ পাহাড়ের আঞ্চলিক জনপ্রতিনিধি ও আইনজীবীরা ঘন ঘন বৈঠক করছেন।
এদিকে কয়েকদিন আগে বিষয়টি নিয়ে চাকমা সার্কেল প্রধান ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় প্রধান বিচারপতির সাথে এক গোপন বৈঠক করেন তার বাসভবনে এবং সেসময় তিনি তাদের একটি দাবিনামা লিখিত আকারে প্রধান বিচারপতির কাছে পেশ করেছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্র নিশ্চিত করেছে। এছাড়াও এই প্রতিনিধি দলের একটি অংশ ইতিমধ্যেই ইউরোপীয় ও পশ্চিমা বিভিন্ন দূতাবাসে গিয়ে বৈঠক করে তাদের প্রভাব দিয়ে সরকারের উপরে চাপ সৃষ্টি করার জন্য অনুরোধ করেছেন।
এছাড়াও এ বিষয়টি নিয়ে তারা ইতিমধ্যেই সরকারের একাধিক উপদেষ্টা ও প্রভাবশালী মহলে বৈঠক করে ১৯০০ সালের শাসন বিধি বৈধকরণ এবং আদিবাসী স্বীকৃতি দেয়ার জন্য দাবি জানিয়েছে। এর অংশ হিসেবে তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার সাথে একাধিক বৈঠক করেন এবং সু প্রদীপ চাকমা তাদের দাদির সাথে সংহতি প্রকাশ করেন।
সিএইচটি কমপ্লেক্স এর ভেতরে পার্বত্য উপদেষ্টার বাসভবন এবং একইসাথে তিন সার্কেল চীফ, আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান, তিন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানসহ পাহাড়ি নেতাদের থাকার আবাসিক সরকারি সুব্যবস্থা থাকায় তারা ঘন ঘন বৈঠক করলেও বিষয়টি কারো নজরে আসছে না। এর অংশ হিসেবে সুপ্রদীপ চাকমা সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক আন্তঃ মন্ত্রণালয় বৈঠকে আদিবাসী স্বীকৃতির পক্ষে তার জোরালো অভিমত ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, আমরা আর কিছু চাই না, শুধু আদিবাসী স্বীকৃতি চাই। এটা পেলেই আমাদের সব পাওয়া হয়ে যাবে। শুধু তাই নয় উচ্চ আদালতে এই শুনানির দিনকে কেন্দ্র করে আঞ্চলিক জনপ্রতিনিধিদের প্রস্তাবক্রমে তিনি ঢাকায় এক থেকে পাঁচ তারিখ পর্যন্ত পাহাড়ি ফল মেলার আয়োজন করেছেন ।
সুপ্রিম কোর্টের অত্যন্ত নিকটবর্তী পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স এ এই পার্বত্য মেলাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই বিপুল পরিমাণ পাহাড়ি জনগোষ্ঠী ঢাকায় এসেছে। তাদের লক্ষ্য ঐদিন যদি আদালত থেকে তাদের দাবির বিরুদ্ধে কোন রায় আসে অর্থাৎ আদিবাসী স্বীকৃতি এবং ১৯০০ সালের শাসন বিধি বৈধকরণ বিষয়ে কোনো পজেটিভ রায় না আছে, তাহলে তারা ঢাকায় ব্যাপকভাবে সহিংস প্রতিবাদ করবেন।
এ উপলক্ষেই বিপুল পরিমাণ পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠনের সাথে জড়িত তরুণ ও যুবক পার্বত্য ফল মেলার নাম করে ঢাকায় ইতিমধ্যেই জড়ো হয়েছে। তাদের সাথে ঢাকায় অবস্থানরত পাহাড়ি ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ এবং কর্মরত তরুণ পেশাজীবীরা টিএসসিতে একাধিক বৈঠক করেছে প্রস্তুতির অংশ হিসেবে।
অথচ বিষয়টি নিয়ে সরকার ও বাঙালিরা একেবারেই ঘুমিয়ে রয়েছে। মূলত পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় জনগোষ্ঠী যদি আদিবাসী স্বীকৃতি পায় এবং ১৯০০ সালের শাসনবিধি আইনগতভাবে বৈধ হয়ে যদি কার্যকর করা হয়, তাহলে আইনিভাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।