জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পর ঝিনাইদহের বাজারে নিত্যপণ্যের মূল্য বাড়ছে। অথচ বাজারে চালডাল তেল ও লবণ, সবজিসহ পণ্যের অভাব নেই। আর পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিকে সংকটে পড়েছে নির্দিষ্ট ও স্বল্পআয়ের সাধারণ মানুষ। তারা ব্যয় কমিয়েও কুলাতে পারছেন না। অনেকে ধারদেনা করছেন।
তারা জানান, অনেকদিন ধরেই তুলনামূলকভাবে বেশি দামে চাল কিনতে হচ্ছিল। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর প্রকারভেদে প্রতি কেজি চালের দাম চার-ছয় টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। মোটা চাল কেজিপ্রতি ছয় টাকা বেড়ে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বি আর-২৮ চাল কেজিপ্রতি পাঁচ টাকা বেড়ে ৬২ টাকা, মিনিকেট পাঁচ টাকা বেড়ে ৭০ টাকা ও বাসমতি ছয় টাকা বেড়ে ৭৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ঝিনাইদহের যুগনি গ্রামের মো. সাজেদুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, তেলের দামের বৃদ্ধির পর ব্যবসায়ীরা পণ্য মূল্যের দাম লাগামহীনভাবে বাড়িয়ে চলেছে।
তার পাঁচ জনের সংসার। বাড়ি ভাড়া ও কিছু কৃষি জমি চাষের আয়ে সংসার চলে। আগে সমস্যা হতো না। কিন্তু বর্তমানে জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় আর কুলিয়ে উঠতে পারছেন না। প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া অন্য কিছু কিনছেন না। ব্যয় কাঁটছাট করে আয়ের মধ্যে থেকে চলার চেষ্টা করছেন।
আরো পড়ুন:সব পুড়ে ছাই, অক্ষত পবিত্র কোরআন
শহরের পবহাটি গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমান বলেন, তার চার জনের সংসার। মাসিক আয় হাজার দশেক টাকা। আগে এ টাকার মধ্যে ভালোই চলত। জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় মাসে তার ১২- ১৩ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। ধারদেনা করে চলতে হচ্ছে।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামের চাষি মো. কাওসার মোল্লা বলেন, তার পাঁচ বিঘা জমি আছে। চাল কিনতে হয় না। কিন্তু এবার সার ও ডিজেলের দাম বাড়ায় চাষের খরচ বেড়ে যাবে। বাজারে সব জিনিসের দাম চড়ে গেছে। অপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনা বন্ধ করে দিয়েছি। দোকান থেকে বাকিতে পণ্য কিনে চলতে হচ্ছে। কিন্তু কীভাবে দোকানের বাকি পরিশোধ করব, এখন সে চিন্তায় আছি।
বিধবা বেদানা বেগম বলেন, জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় আর চালাতে পারছি না। গত কয়েক দিন ধরে শুধু ভর্তা দিয়ে ভাত খাচ্ছি। শহরের নতুন হাট খোলার মুদি দোকানদার জুয়েল রানা বলেন, পণ্যের দাম বাড়ার পর মানুষ কম কিনছে।
এ বিষয়ে জেলা মার্কেটিং অফিসার মো. গোলাম মারুফ খান চাল সবজিসহ পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কথা স্বীকার করে বলেন, বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
মিরর/ আশরাফুল