সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, অল্প কিংবা বেশি সংস্কার বলে কিছু নেই। রাষ্ট্র ও রাজনীতির প্রয়োজনে সংস্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। তবে পুথিগত সংস্কারের চেয়ে প্রায়োগিক সংস্কার বেশি জরুরি। তাই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
রোববার (২৫ মে) রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যোগ দিয়ে তারেক রহমান এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন দেখার প্রত্যাশায় আমরা। গতকাল (শনিবার) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধিদলের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টাকে বিএনপি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে।
সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত সরকার, অন্তর্বর্তী সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার হোক, নাগরিকদের সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা জারি রাখতে হবে। দেশের জনগণ সরকারের করুণার পাত্র নয়। সরকার অবশ্যই জনগণের ন্যায্য দাবি মানতে বাধ্য। এখানে সরকারের মান-অভিমান বা রাগ-বিরাগের কোনো সুযোগ নেই।
দেশে স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক সরকার না থাকায় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগে স্থবিরতা নেমে এসেছে উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এক অনিশ্চিত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। যে কারণে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রতিদিন বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে রাজপথে নেমে আসছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, এই মুহূর্তে তাদের দাবি শোনার কেউ নেই।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বাজেট পাসের ঠিক আগ মুহূর্তে এনবিআরের সংস্কার চাপিয়ে দিয়ে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে অচলাবস্থা তৈরি করেছে। এটি অর্থনীতির জন্য খুব ভালো বিষয় নয়। এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় জবাবদিহিমূলক গণতান্ত্রিক সরকার সবচেয়ে বেশি কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে বলে সবার বিশ্বাস।
অন্তর্বর্তী সরকার জবাবদিহিমূলক নয় উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের নৈতিক ও রাজনৈতিক বৈধতার সংকট হয়তো নেই। তবে এই সরকার জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক নয়। তাই নৈতিক কারণে সরকারের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা জনগণের কাছে স্পষ্ট থাকা প্রয়োজন। জনগণকে অন্ধকারে রেখে বা রাজনৈতিক দলগুলোকে অনিশ্চয়তায় রেখে শেষ পর্যন্ত কোনো পরিকল্পনা কার্যকর ও টেকসই হয় না, হবেও না।