কেউ বা কম নয় কারো চেয়ে। দেখিয়ে দিলেন যার জায়গায় যতটুকু ক্ষমতা। গণ্ডগোলটা বেধেছিল বিদ্যুৎ কর্মীর সঙ্গে পুলিশের। একজন করলেন রাস্তায় জরিমানা, আরেকজন কেটে দিলেন পুরো থানারই বিদ্যুৎ সংযোগ।
ভারতের উত্তর প্রদেশের লক্ষ্ণৌ জেলার শ্যামলীতে সম্প্রতি এ ঘটনা ঘটেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
হেলমেট ছাড়া রাস্তায় বের হওয়ার দায়ে জেলা বিদ্যুৎ অফিসের এক চুক্তিভিত্তিক কর্মীকে ছয় হাজার রুপি জরিমানা করেন জেলা ট্রাফিক পুলিশের সদস্য। ওই ঘটনার পরপরই বিল বকেয়ার অজুহাতে থানার বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেন জরিমানার শিকার কর্মী।
উত্তর প্রদেশে দুই চাকার যানবাহন চালানোর সময় হেলমেট না পরলে দুই হাজার রুপি জরিমানার বিধান থাকার পরও ছয় হাজার রুপি কেন জরিমানা করা হয়েছে তা নিয়ে অবশ্য বিস্তারিত কিছু জানায় যায়নি।
এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে থানার বিদ্যুৎ সংযোগ কাটার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। এতে মই দিয়ে খুঁটিতে উঠে বিদ্যুতের সংযোগ কাটতে দেখা গেছে ওই কর্মীকে।
বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, অনেক বেশি বিদ্যুৎ বিল জমা হওয়ার পরও থানা কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় সংযোগ কেটে দেয়া হয়েছে। তবে এ নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য আসেনি।
যাকে নিয়ে এত ঘটনা সেই মেহতাব বলেছেন, কাজ শেষে অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে জরিমানার মুখোমুখি হন তিনি। আর কখনই এমন ঘটনা ঘটবে না বলার পরও জরিমানা করা হয় তাকে।
যে পুলিশ সদস্য এই বিদুৎ কর্মীকে জরিমানা করেন তার বিরুদ্ধে কোনো কথা না শোনার অভিযোগ করেন মেহতাব। তিনি বলেন, ওই পুলিশ সদস্য আমাকে বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগ মানুষের অর্থ লুট করে নিচ্ছে।
মাসিক বেতন ৫ হাজার রুপিতে চুক্তিভিত্তিক চাকরি করা এই বিদ্যুৎ কর্মী বলেন, আমাকে যখন জরিামানা করা হয়, তখন অনেকেই একই ধরনের অপরাধ করে রাস্তা দিয়ে চলে যান। তবে কাউকেউ ধরা হয়নি।
অবশ্য এ ঘটনা যে এই মহাদেশে এটাই প্রথম তা নয়, ২০২১ সালের ২৭ অক্টোবর ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের পাবনার ঈশ্বরদীতেও ঘটেছিল প্রায় একই ঘটনা।
বিদ্যুৎ বিভাগের (নেসকো) এক উপ-সহকারী প্রকৌশলীর মোটরসাইকেল আটক ও জরিমানার জেরে ট্রাফিক পুলিশ অফিসের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয় তখন।
সেদিন বেলা সাড়ে ৫টার দিকে ট্রাফিক আইনে ওই মোটরসাইকেল আটক ও জরিমানার ৩০ মিনিটের মধ্যেই শহরের পোস্ট অফিস মোড় এলাকায় অবস্থিত ট্রাফিক পুলিশ অফিসের বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের অজুহাতে তাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
ঘটনার পর জেলা পুলিশের ট্রাফিক সার্জেন্ট আজিজুল ইসলাম জানান, মোটরসাইকেলের কাগজ এবং আরোহীর হেলমেট না থাকায় তিন হাজার টাকা জরিমানা এবং মোটর সাইকেলটি আটক করা হয়। মামলার ৩০ মিনিটের মধ্যেই অফিসের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
আর নেসকোর ঈশ্বরদীর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল নূর তার অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাসেল মিঞার মোটর সাইকেল আটকের ঘটনা স্বীকার করে তখন বলেন, যাদের বিল বকেয়া আছে, তাদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে।
সুত্র: এনডিটিভি