কোরবানী উপলক্ষে জমে উঠেছে পশুরহাট। ঈদের আগে রাজধানী ঢাকায় কোরবানির পশু পৌঁছে দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের গরু ব্যবসায়ীরা। সেই ব্যস্ততায় গতি ও নিরাপত্তা যোগ করতে জামালপুরের ইসলামপুর বাজার রেলস্টেশন থেকে ঢাকায় চালু করা হয়েছে তিনটি ‘ক্যাটল স্পেশাল ট্রেন’। গরু ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে বাংলাদেশ রেলওয়ের এই বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে চলতি বছর।

সোমবার (২ জুন) বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে ইসলামপুর বাজার রেলস্টেশন থেকে প্রথম ক্যাটল স্পেশাল ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়। এরপর বিকেল ৫টায় ছাড়ে দ্বিতীয় ট্রেন ‘ক্যাটল স্পেশাল-০২’।

আগামীকাল মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেল ৫টায় ছাড়বে তৃতীয় ট্রেন ‘ক্যাটল স্পেশাল-০৩’। এভাবে তিনটি ট্রেনে মোট ১,২০০ গরু রাজধানীতে পৌঁছাবে বলে জানিয়েছেন ইসলামপুর বাজার রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. শাহীন মিয়া।

তিনি আরও জানান, প্রতি বছর কোরবানির ঈদের আগে গরু ব্যবসায়ীদের ঢাকায় পশু পরিবহনে নিরাপদ ও সাশ্রয়ী পরিবহনব্যবস্থা নিশ্চিত করতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এই উদ্যোগ নেয়। গত চার বছর ধরে ইসলামপুর থেকে কোরবানির গরু পরিবহনের জন্য ‘ক্যাটল স্পেশাল ট্রেন’ চালু করা হয়ে আসছে। তবে এবার গরু ব্যবসায়ীদের আগ্রহ ও চাহিদা বেশি থাকায় অতিরিক্ত একটি ট্রেন যুক্ত করে তিনটি ক্যাটল স্পেশাল ট্রেন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

প্রতিটি ট্রেনে রয়েছে ২৫টি করে মোট ৭৫টি ওয়াগন। প্রতিটি ওয়াগনে ১৬টি করে গরু পরিবহন করা হচ্ছে। অর্থাৎ তিনটি ট্রেনে ১২শ’ গরু পৌঁছাবে ঢাকায়। প্রতি গরুর ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০০ টাকা এবং প্রতি ওয়াগনের জন্য ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ হাজার টাকা।

গরু ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ট্রেনে গরু পরিবহন তাদের জন্য যেমন সাশ্রয়ী, তেমনি নিরাপদও। ইসলামপুরের গরু ব্যবসায়ী আব্দুল আলিম বলেন, আগে ট্রাক বা পিকআপ ভ্যানে করে গরু নিয়ে ঢাকায় যেতাম। তখন পথে পথে ডাকাত, পুলিশের ভয়, চাঁদাবাজি—সব মিলিয়ে খুব ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। হাটে হাটে গরু নামিয়ে রাখারও ঝামেলা ছিল। ট্রেনে গরু পাঠালে এসব সমস্যা হয় না। নিরাপদে ঢাকায় পৌঁছায়।”

আরেক ব্যবসায়ী রহমতুল্লাহ বলেন, ট্রাকে দীর্ঘ সময় গরু থাকলে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে, অনেকে তো পথে মারা যায়। খরচও বেশি পড়ে। কিন্তু ট্রেনে গেলে পাঁচশ’ টাকা খরচ হয়, তাও গরু আরামেই যায়। ট্রেনের পরিবেশ এমন থাকে, যেন গরু গোয়ালঘরেই আছে।”

ইসলামপুর বাজার রেলস্টেশন মাস্টার শাহীন মিয়া বলেন, গরু ব্যবসায়ীদের স্বস্তি দিতে এবার তিনটি ক্যাটল স্পেশাল ট্রেন দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ক্যাটল স্পেশাল-০১ ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। বাকি দুটি ট্রেনও নির্ধারিত সময়ে রওনা দেবে। আমরা চেষ্টা করছি যেন কোনো বিশৃঙ্খলা বা বিলম্ব না হয়।”