জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে সেনাবাহিনী ও থানা পুলিশের পৃথক অভিযানে দেশীয় অস্ত্র, মাদক ও নগদ অর্থসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযানে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন আওনা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য ও কিশোর গ্যাংয়ের মূল হোতা হিসেবে পরিচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী মোবারক হোসেন রাজা, চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী মো. নাজির এবং তার সহযোগী মো. ফারুক।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে সোমবার দিনগত রাত থেকে মঙ্গলবার ভোর রাত পর্যন্ত সরিষাবাড়ী উপজেলার আওনা ইউনিয়নের পাখিমারা এলাকায় সেনাবাহিনীর ইউনিট ২৬ বীরের একটি বিশেষ দল ও তারাকান্দি তদন্ত কেন্দ্র পুলিশের যৌথ দুটি দল এ অভিযান পরিচালনা করে। পরে সকালে গ্রেফতারকৃতদের সরিষাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করলে পুলিশ আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠায়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন ইউনিট ২৬ বীরের সরিষাবাড়ী অস্থায়ী আর্মি ক্যাম্পের লেফটেন্যান্ট শাহরিয়ার তালুকদার রিফাত এবং তারাকান্দি তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম।
অভিযানের সময় ঘটনাস্থল থেকে ৯টি বিভিন্ন প্রকার দেশীয় ধারালো অস্ত্র, ১৫ পিস ইয়াবা, ৫ গ্রাম গাঁজা, ৭টি মোবাইল ফোন, মাদক বিক্রির নগদ ৬ হাজার ৫৫৭ টাকা, গ্যাস লাইটসহ মাদক সেবন ও বিক্রির বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।
অভিযানের বিষয়ে লেফটেন্যান্ট শাহরিয়ার তালুকদার রিফাত বলেন, সরিষাবাড়ী এলাকায় অপরাধ দমনে নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে এ অভিযান চালানো হয়। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। এ ক্ষেত্রে স্থানীয়দের সহযোগিতা প্রয়োজন।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, শীর্ষ সন্ত্রাসী মোবারক হোসেন রাজা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছেন। বিতর্কিত সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় তিনি আওনা ইউনিয়নে প্রভাব বিস্তার করেন এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে ইউপি সদস্য পদে নির্বাচিত হন। এরপর থেকেই মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও কিশোর গ্যাং পরিচালনার মাধ্যমে এলাকায় অপরাধের জাল বিস্তার করেন। তার বিরুদ্ধে খুনসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চাঁদ মিয়া বলেন, গ্রেফতারকৃত তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।