পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে চাচাতো ভাইয়ের নির্মম কোপে জেঠাতো ভাই ও তার মা গুরুতরভাবে জখম হয়েছেন। পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে এ হামলার ঘটনায় মা-ছেলের হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার দণ্ডপাল ইউনিয়নের রাধানাথ মাটিয়ার পাড়া এলাকায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন একই এলাকার রঞ্জু সরকারের স্ত্রী মাহফুজা ও তার ছেলে মামুন। অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান একই এলাকার ফেরদৌসের ছেলে। অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর সম্পর্কে মামুনের চাচাতো ভাই।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হামলার সময় মোস্তাফিজুর ধারালো লোহার অ্যাঙ্গেল দিয়ে উপর্যুপরি কোপাতে থাকেন মামুনকে। বাঁচার জন্য মামুন দৌড়ে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করলেও, দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে ফের হামলা চালায় মোস্তাফিজুর। এতে মামুনের দুই হাতের কবজি ও ডান কান বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, মাথায়ও গুরুতর জখম হয়। ছেলেকে রক্ষায় এগিয়ে আসেন মা মাহফুজা। তাকেও এলোপাতাড়ি কোপানো হয়।তার ডান হাতের চারটি আঙুল এবং বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এবিষয়ে আহত মামুনের স্ত্রী জাহানারা বেগম বলেন, ঘটনার সময় আমার কোলে তিন মাসের সন্তান ছিল। তাই কিছু করতে পারিনি। মোস্তাফিজুর দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত এবং স্ত্রীর সঙ্গে কলহে লিপ্ত ছিল। কয়েক মাস আগে এসব নিয়ে পারিবারিক আলোচনায় মামুন শাসন করায় সে ক্ষিপ্ত ছিল।
ঘটনার পর স্থানীয়রা আহত মা-ছেলেকে উদ্ধার করে প্রথমে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেন। তবে দু’জনের অবস্থাই গুরুতর হওয়ায় তাদের দ্রুত রেফার করা হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এদিকে ঘটনার পর স্থানীয়রা মোস্তাফিজুরকে আটক করে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশের পৌঁছানোর আগে স্থানীয় জনতা উত্তেজিত হয়ে তাকে মারধরও করে।
পরে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে হেফাজতে নেয়। এদিকে হামলায় ব্যবহৃত লোহার অ্যাঙ্গেলটি পার্শ্ববর্তী একটি পুকুরে ফেলে দেয় অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর। রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (দুপুর ২টা) পুলিশ লোহার অ্যাঙ্গেলটি পুকুর থেকে উদ্ধারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এবিষয়ে দেবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোয়েল রানা বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে অভিযুক্তকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এই বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।