দক্ষিণ এশিয়ার মুসলমানদের স্বাধীন স্বদেশ ধারণার রূপকার মহান দার্শনিক, কবি ও চিন্তাবিদ আল্লামা ইকবালকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্মরণ করতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ।
আল্লামা ইকবালের ৮৭তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের আহ্বায়ক খোমেনী ইহসান এ দাবি জানান।
এতে বলা হয়, আগামীকাল আল্লামা মুহাম্মদ ইকবালের ৮৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৮৭৭ সালের ৯ নভেম্বর পাকিস্তানের শিয়ালকোটে জন্মগ্রহণকারী আল্লামা ইকবাল ১৯৩৮ সালের ২১ এপ্রিল পাঞ্জাব প্রদেশের লাহোরে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি বিংশ শতাব্দীর মুসলিম জাগরণের অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন। তিনি একাধারে কবি, সাহিত্যিক, ইতিহাসবিদ, দার্শনিক, রাজনীতিবিদ এবং ইসলামি চিন্তাবিদ। তবে তার সবচেয়ে বড় অবদান হলো তিনি উপমহাদেশের স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্র ধারণার রূপকার ছিলেন ।
১৯৩০ সালের ঐতিহাসিক আল্লাহাবাদ ভাষণে তিনি প্রথম পৃথক স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্রের ধারণা প্রস্তাব করেন। এর ভিত্তিতে ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে দক্ষিণ এশিয়ার পূর্বে ও পশ্চিমে দুটি মুসলিম ভূমি স্বাধীনতা লাভ করে যা বর্তমানের স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ ও পাকিস্তান রাষ্ট্র হিসেবে বিরাজ করছে।
বাণীতে আরও বলা হয়, বর্তমানে ভারতে নির্যাতন নিপীড়নের শিকার ৪০ কোটি মুসলমানের অবস্থা দেখে আমরা অনুভব করি মুসলমানদের স্বাধীন স্বদেশ থাকা অনেক বড় সৌভাগ্যের ব্যাপার। কারণ আমাদের পূর্বপুরুষেরা আল্লামা ইকবালের দর্শনে উদ্বুদ্ব হয়ে পৃথক স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না করলে আমরাও ভারতের মুসলমানদের মতো নির্যাতিত হতে পারতাম।
আল্লামা ইকবালের অবদানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে তাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্মরণ করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের আহ্বায়ক খোমেনী ইহসান।
এজন্য জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরেছে; যার মধ্য আছে আল্লামা ইকবালের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন। জাতীয় পর্যায়ে সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারে আল্লামা ইকবালের জীবন ও কর্মভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র ও আলোচনা অনুষ্ঠান সম্প্রচার। তার রচনাবলীর বাংলা অনুবাদ প্রকাশনা ও জনপ্রিয়করণ।
এছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আল্লামা ইকবালের মুসলিম জাতীয়তাবাদী দর্শনকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা স্তরে আল্লামা ইকবালের রচনা ও দর্শন পাঠ্যক্রমে সংযোজন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ইকবাল স্টাডিজ’ বিভাগ বা গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার দাবি জানানো হয়েছে।