ইব্রাহিম খলিল: শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দুর্গাবাটি এলাকায় খোলপেটুয়া নদীর ভেঙে যাওয়া উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধের পাশ দিয়ে দেয়া রিংবাধটি টানা ৫দিনের মাথায় সাড়ে তিন হাজার মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রমে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় পানি বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে।
সোমবার সকাল থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক ছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয় হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহনে বাঁশ দিয়ে পাইর্লিং করে ও বালুর বস্তা ফেলে এই বাঁধের কাজ শুরু করা হয়। এর আগে গত ১৫ জুলাই শুক্রবার রাতে দূর্গাবাটি এলাকায় খোলপেটুয়া নদীর প্রায় ২০০ ফুট এলাকাজুড়ে উপকুল রক্ষা বেঁড়িবাধটি ভেঙে যায়। এতে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের অন্তত ১২টি গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়।
ভেসে যায় হাজার হাজার বিঘা মৎস্য ঘের ও ফসলি জমি। পানিবন্দী হয়ে হয়ে পড়ে প্রায় সাড়ে তিন হাজার পরিবার। জিল্লুর রহমান নামে একজন বলেন, এলাকায় পানি প্রবেশ ঠেকাতে সাড়ে তিন হাজার মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রমে রিং বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এবার পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রকল্প দেখিয়ে টাকা তুলে নেবে।
প্রতিবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কারে দেখা যায় না। এই এলাকার নিজেদের জান মাল বাঁচাতে বাঁধ নির্মাণ করে আর পানি উন্নয়ন বোর্ড একাধিক প্রকল্প দেখিয়ে টাকা তুলে নেয়। আমাদের এলাকায় ঝড়ে বা জলোচ্ছ¡াস লাগে না। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে নদীতে পানি একটু বৃদ্ধি পেলেই বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। টেকসই নির্মাণ ছাড়া আমাদের দু:খের দিন শেষ হবে না।
বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাজী নজরুল ইসলাম জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক এবং ইউনিয়ন পরিষদ, স্থানীয় এলাকাবাসী ও এনজিও শ্রমিকসহ প্রায় সাড়ে তিন থেকে চার হাজার উপকূলীয় মানুষের অংশগ্রহনে বেড়িবাঁধ মেরামত কার্যক্রম এখনও চলমান রয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরের দিকে বাঁধটি সম্পূর্ণ মেরামত করা সম্ভব না হলেও কোন রকমে জোয়ারের পানি লোকলয়ে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য প্রাপন চেষ্টা করা হয়েছে।
দুপুরের জোয়ারে সামান্য কিছু পানি বালুর বস্তার উপর দিয়ে ওভার ফ্লো হয়ে প্রবেশ করেছে। তবে রাতের জোয়ারে বাধ বেধে ফেলেছি। আল্লাহর রহমতে এখন আর পানি প্রবেশ করছে না।
পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের বিষয়টি নিশ্চিত হরে জানান, রাতের জোয়ার রিং বাধের কাজ শেষ হয়েছে। শ্যামনগর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলন জানান, আল্লাহর অশেষ রহমতে রাত ১০ টা ৩০ মিনিটে রিং বাঁধ নির্মাণ শেষ হয়েছে। এলাকার আর পানি প্রবেশ করছে না।